নবম শ্রেণির শুরুর দিকে দারুণ কিছু ঘটনা ঘটে!
একটু খেয়াল করলে দেখবেন, চতুর্থ শ্রেণি বা পঞ্চম শ্রেণি থেকেই ‘প্রথম সারির স্টুডেন্টরা বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে পারবে, শেষের সারিরগুলো পারবে না’ এমন একটি বার্তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
ফলে নবম শ্রেণিতে উঠে শেষের সারির শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান বিভাগে যাওয়ার সাহস তো পায়ই না! উল্টো প্রথম সারির অনেকেই বিজ্ঞান বিভাগ নেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে।
কিছু কিছু অভিভাবক ও শিক্ষক তো আরো একধাপ এগিয়ে!
কোন শিক্ষার্থী নিজে থেকে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হতে চাইলে তারা বিস্ময় আর সন্দেহের দৃষ্টি নিয়ে বলেই ফেলে-
‘পারবি তো!’
যার ফল, বিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী কম!
যারা বিজ্ঞান বিভাগ নেয়, তারাও ছোটবেলা থেকে শুনে আসা ‘বিজ্ঞান কঠিন’ এই ধারণা থেকে বের হয়ে বিজ্ঞানকে উপভোগ করতে পারে না।
এবার পুরো বিষয়টিকে আমরা অন্য একটি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি চলুন-
আমাদের শিক্ষার্থীরা আর্লি চাইল্ডহুড থেকেই ধীরে ধীরে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক বিষয়গুলোর সাথে পরিচিত হতে শুরু করেছে।
ক্লাসের পড়া নয়, স্রেফ খেলনা বা অবসর কাটানোর আনন্দের একটা অংশ হিসেবে তারা বিজ্ঞানের মজার মজার সব বিষয় হাতে-কলমে করে দেখা শুরু করেছে।
নবম শ্রেণিতে ব্যবহারিক ক্লাস করার উন্মাদনা, উত্তেজনা আর উৎসাহটা তারা একদম ক্লাস ওয়ান থেকে পাওয়া শুরু করেছে।
কী হবে?
হ্যাঁ, পুরো দৃশ্যপটই উল্টে যাবে। বিজ্ঞান তাদের কাছে মোটেও আর কঠিন ও বিরক্তিকর সাবজেক্ট থাকবে না। বিজ্ঞান হয়ে উঠবে উপভোগের একটি বিষয়।
তাই একদম ছোট বেলা থেকেই বাচ্চাদের মধ্যে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী করে তোলা উচিত
কিভাবে তা করা যেতে পারে?
১। বিজ্ঞানবাক্স কিনে দিন
বিজ্ঞানবাক্স হচ্ছে বাংলাদেশের প্রথম সাইন্সকিট।
বুয়েটের টপ স্টুডেন্টেদের গবেষণায় তৈরি এই সাইন্স কিটটি সম্পুর্ন বাংলায় তৈরি। (ইংলিশ ভার্শন ও আছে)
বাচ্চারা এটার মাধ্যমে সহজেই বিজ্ঞানের বিভিন্ন থিওরি হাতে কলমে করতে পারে। লার্নিংও হয়। এক্টিভিটিও হয়।
কি কি আছে বিজ্ঞানবাক্সে?
- এক্সপেরিমেন্ট করার ৩০০+ উপকরন।
- ম্যানুয়াল বই
- ভিডিও টিউটোরিয়াল সিডি
- থিওরি বোঝার জন্যে রঙ্গিন গল্পের বই
কোন বয়সের জন্যে কোন বিজ্ঞানবাক্স বেস্ট হবে, দেখতে ভিজিট করুন
বিজ্ঞানবাক্সের ব্যাপারে অন্যরকম গ্রুপের চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান সোহাগ কি বলছেন পড়ুন।
বিজ্ঞানবাক্স এখনি দেখতে ক্লিক করুন
২। বিজ্ঞান মেলাতে নিয়ে যানঃ
নতুন নতুন বিজ্ঞানভিত্তিক বিষয় সম্পর্কে জানার জন্য বিজ্ঞান মেলা হল বাচ্চাদের জন্য উপযুক্ত স্থান। এখানে তারা প্রশিক্ষক ও অন্য বাচ্চাদের সাথে যোগাযোগ করার সুযোগ পায়। এর মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন বিষয়ে জানার আগ্রহ আরো বাড়ে।
৩। ঘুরে আসুন জাদুঘর থেকেঃ
জাদুঘর হল এমন একটি স্থান যেখানে ইতিহাস সংরক্ষিত থাকে। মাঝে মাঝে বাচ্চাদের নিয়ে বিজ্ঞান জাদুঘর থেকে ঘুরে আসুন, তাদেরকে সুযোগ করে দিন বিজ্ঞানের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে। তারা জানতে শুরু করবে মানব সভ্যতার শুরু থেকে এখন অবধি বিজ্ঞানের অবদান সম্পর্কে।আপনার সন্তানকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন বাংলাদেশ বিজ্ঞান জাদুঘর, বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারে।
৪। সাইফাই সিনেমা দেখুন বাচ্চাদের নিয়েঃ
বর্তমান সময়ে বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার সম্পর্কে জানতে বিজ্ঞান বিষয়ক সিনেমাগুলো বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যদিও অধিকাংশ বিজ্ঞান বিষয়ক মুভিতে তেমন কিছু নাই, তবে কিছু কিছু ভাল সিনেমা আছে যা থেকে বাচ্চারা বিজ্ঞান সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে। ভাল কিছু সায়েন্স ফিকশন সিনেমার নাম বললে ২০০১ : আ স্পেস অডিসি, ব্লেড রানার, এলিয়েন, অ্যাপোলো ১৩, মারটেইন, দ্যা ম্যান হু ন্যু ইনফিনিটি ইত্যাদি নাম গুলো উঠে আসে। বিনোদনের সাথে হোক বিজ্ঞানশিক্ষা।
৫। বেড়াতে নিয়ে যানঃ
আপনার বেড়ে ওঠা সন্তানকে নিয়ে ঘুরে আসুন নতুন কোন পরিবেশ থেকে, যা আপনার সন্তানের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সাহায্য করবে। এসময় আপনি তাদের সাথে বিজ্ঞান, প্রকৃতি, বন্যজীবন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। তাদেরকে হাতে কলমে শেখাতে পারেন এই সবগুলো বিষয় একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।
৬। খেলতে দিন বাচ্চাদেরঃ
বর্তমান সময়ে বাচ্চারা ভিডিও গেম, অ্যাপস, ডিজিটাল বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে খেলতে খেলতে বড় হচ্ছে। ফলে বাচ্চাদের শিক্ষণীয় উপকরণের সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে বাবা- মাকে বিভ্রান্তিতে পড়তে হচ্ছে। তবে আশার কথা হচ্ছে এমন অনেক উপকরণ আছে যার মাধ্যমে বাচ্চারা একসাথে খেলতে ও বিজ্ঞান শিক্ষতে পারবে।
১। খেলনা হিসাবে মাইক্রোস্কোপ/আতশী কাঁচ দিনঃ
বাচ্চাদের অভ্যাস বিজ্ঞানীদের মত করে যে কোন কিছু গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা। তাদের আগ্রহ ধরে রাখতে খেলনা হিসাবে মাইক্রোস্কোপ/আতসী কাঁচ দিতে পারেন। এই মাইক্রোস্কোপ দিয়েই তারা ছোট বড় বিভিন্ন কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে যে কোন কিছু আগের থেকে আরো সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করবে, তৈরি হবে নতুন নতুন প্রশ্ন, জানতে পারবে অজানা সব বিষয়।
৭। বাচ্চাদের সাথে আপনিও শিখুনঃ
বাচ্চাদের বিজ্ঞানে আগ্রহী করে গড়ে তোলার অন্যতম উপায় হল তাদের সাথে শিখতে শুরু করা। যখন আপনি তাদের সাথে শিক্ষায় অংশ নিবেন তখন তারা আপনাকে আরো বেশি পরিমাণে প্রশ্ন করবে বিভিন্ন বিষয়ে কাকে বলে, কেন হয়, এসব ব্যখ্যা নিয়ে আপনার সাথে আলোচনা করবে। যে কোন বিষয়ে বাচ্চাদের কৌতুহল মেটাতে এটা খুবই কার্যকরী।
অন্য কিছু যদি না ও করেন,
শুধু মাত্র বিজ্ঞানবাক্স কিনে দেয়ার মাধ্যমেই
আপনি আপনার সন্তানকে ছোট বেলা থেকেই বিজ্ঞানে আগ্রহী করে তুলতে পারেন।
2,650 total views, 1 views today