এলার্জিক রাইনাইটিস কী?
সাধারণত আমাদের শরীর সবসময় ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া ও বিভিন্ন রোগের জীবাণু সনাক্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এই প্রতিরোধ করতে গিয়ে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কার্যকারিতা বেড়ে যাওয়ার ফলে শরীরে কিছু কিছু প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলেই আমাদের জ্বর হয়। কিন্তু শরীরে এলার্জির জীবাণু প্রবেশ করলে সেই জীবাণু প্রতিহত করার জন্য শরীরে যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় এলার্জিক রাইনাইটিস। আমাদের দেশের মতো দূষণ কবলিত দেশে বিভিন্নভাবে শিশুরা বহিরাগত পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হয়। শিশুদের খেলনা থেকেও শিশুদের শরীরে ক্ষুদ্র পরজীবী প্রবেশ করতে পারে। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে এলার্জিক রাইনাইটিস দূর না করলে শিশুদের অ্যাজমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কারণ
বাতাসের মাধ্যমে বিভিন্ন পরজীবী নিঃশ্বাসের সাথে শরীরে প্রবেশ করলে এলার্জিক রাইনাইটিস হতে পারে। তাছাড়া ফুলের রেণু, আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন, ধুলাবালির মাধ্যমে ছড়ানো পরজীবী, সিগারেটের ধোঁয়া, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ, দীর্ঘদিন ধরে অপরিষ্কার থাকার ফলে শিশুদের খেলনা থেকেও এলার্জিক রাইনাইটিসের জন্য দায়ী পরজীবী শরীরে প্রবেশ করতে পারে।
লক্ষণ
• অতিরিক্ত হাঁচি।
• হাঁচির সাথে নাক দিয়ে পানি পড়া।
• নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া।
• নাক, মুখ ও চোখ লাল হয়ে যাওয়া।
• হালকা জ্বর থাকা।
• চোখের নিচের পাতা ফুলে যায়।
• চোখ চুলকানো।
• কখনো কখনো চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে।
• রাতে ঘুম থেকে উঠে বসে থাকা।
• ক্লান্তি অনুভব করা।
• জোরে শ্বাস নিলে বাঁশির মতো শব্দ হওয়া।
• মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে চাওয়া।
• নাক ডাকা।
প্রতিরোধের উপায়
শিশুকে সিগারেটের ধোঁয়া থেকে দূরে রাখুন
সিগারেটের ধোঁয়া শিশুর নিঃশ্বাসের সাথে প্রবেশ করলে শিশুর ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। একই সাথে সিগারেটের ধোঁয়ার ফলে শিশুর এলার্জিক রাইনাইটিস হতে পারে। সেজন্য শিশুর সামনে সিগারেট খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে
অনেক দিন ধরে অপরিষ্কার থাকার ফলে ঘরের বিভিন্ন জিনিসে ক্ষুদ্র পরজীবী জন্ম নেয়। যা নিঃশ্বাসের মাধ্যমে প্রবেশ করে এলার্জিক রাইনাইটিসের সংক্রমণ ঘটাতে পারে। ঘরের কার্পেট, বিছানা চাদর, বালিশের কভার, শিশুদের খেলনা ভালোভাবে ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে। বালিশের কভার ও বিছানা চাদরে মানুষের মৃত চামড়া পড়ে থেকে সেখান থেকে পরজীবী জন্ম নিতে পারে।
মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে
বাইরে বের হলে ধুলোবালি থেকে বাঁচতে মুখে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। এতে ধুলোবালি ও ধুলোবালিতে থাকা ক্ষুদ্র পরজীবী শরীরে প্রবেশ করতে পারবে না। মুখের মাস্ক নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
এলার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ দেখা দিলে তা বড় কোন ক্ষতি করার আগেই দ্রুত বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
তথ্যসূত্র-wikipedia
1,772 total views, 2 views today