[emaillocker]
প্রয়োজনে বা যে কারণেই হোক আমরা প্রায়ই শিশুদের বাসায় একা রেখে যাই। বাসায় সন্তানকে একা রেখে যাওয়া মানেই হল মাথায় এক পাহাড় পরিমাণ শঙ্কা নিয়ে থাকা। আবার হামাগুড়ি দেয়া শিশু অর্থাৎ এরকম অবুঝ শিশুদের ক্ষেত্রে ত বাসায় থাকলেও তাদের নিরাপত্তা নিয়ে সদা চিন্তিত থাকতে হয়। এমনকি ঘুমের মধ্যেও শিশুর নিরাপত্তা নিয়ে মাথায় একপ্রকার দুশ্চিন্তা কাজ করতে থাকে। এই অবস্থায় বিপদজনক ব্যাপার ঘটতে পারে যদি আপনার শিশু বাটন ব্যাটারি নামক একটি ক্ষতিকর বস্তু গিলে ফেলে।
বাটন ব্যাটারি কি?
বাটন ব্যাটারি হল বোতামের মত দেখতে ছোট গোলাকার ব্যাটারি যা সাধারণত পাওয়া যায়,
> হাত ঘড়ি,
> টিভি রিমোট,
> চাবির রিং,
> এলএডি লাইট
> ক্যালকুলেটর,
> হেয়ারিং এইডস
> বাচ্চাদের খেলনা অথবা,
> যেকোনো ছোট ছোট ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইসে
অর্থাৎ বোতামের মত দেখতে এই ব্যাটারি গুলো শিশুদের একেবারে হাতে নাগালেই থাকে।
কিন্তু ভয়ের বিষয়টি হচ্ছে-
একটি বাটন ব্যাটারিতে যথেষ্ট পরিমাণে বিষাক্ত উপাদান থাকে যা একটি পূর্ণবয়স্ক মানুষেরই, সময়মত ডাক্তারের শরণাপন্ন নাহলে, জীবননাশের কারণ হতে পারে। বাটন ব্যাটারি গিলে ফেলার কারণে প্রতি বছর আমেরিকায় প্রায় ২ হাজার ৮ শ শিশু ডাক্তারের নিকট চিকিৎসার জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মানে, প্রতি ৩ ঘণ্টায় একটি শিশু।
একটি বাটন ব্যাটারিতে সাধারণত যে বিষাক্ত উপাদানগুলো থাকে:
বাটন ব্যাটারি গিলে ফেললে তা আপনার শিশুর জন্য কতটা ভয়াবহ হতে পারে, এ জন্যে ইউটিউবে এই ভিডিও টি দেখতে পারেন।
কীভাবে বুঝবেন শিশু ব্যাটারি গিলে ফেলেছে
শিশু বাটন ব্যাটারি গিলে ফেলে তখন তার মাঝে সাধারণ কিছু লক্ষণ দেখা যায় যেগুলো শিশুর এমনি সময়ও হতে পারে। এজন্যে শিশু বিশেষজ্ঞ বাদে অন্যদের সাধারণ ভাবে এইসব লক্ষণ দেখে সঠিক উপায়ে ব্যাটারি গিলে ফেলার বিষয়টি সনাক্ত করা খুবই জটিল। তারপরেও যে লক্ষণ গুলো শিশুর মাঝে পরিলক্ষিত হতে পারে:
> বমি বমি ভাব হওয়া অথবা বমি হওয়া
> জ্বর আসা
> কাশি
> পেট ব্যথা
> শ্বাস কষ্ট
> শিশুর টয়লেটের সাথে রক্ত বের হওয়া
> গলা ব্যথা
> প্রচণ্ড বিরক্তি ভাব
> খাবার গ্রহণে অনীহা
ইত্যাদি।
শিশু বাটন ব্যাটারি গিলে ফেললে কি করবেন
> ব্যাটারি গিলে ফেলার বিষয়টি যদি নিশ্চিত না থাকেন তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে পারেন। যেমন, এক্সরের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে।
> ঐ সময়ের মধ্যে অর্থাৎ ডাক্তার দেখানোর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত কোন খাবার বা পানি দিবেন না।
> বাচ্চাকে বমি করার জন্য জোর করবেন না।
> বাচ্চা ঠিকমত শ্বাস নিতে পারছে কি না তা আগে নিশ্চিত হোন।
> তবে শিশুদের জন্য এটি যেহেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাই, দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াই উত্তম।
শিশুর নিরাপত্তার জন্য আগেই যে কাজগুলো করতে পারেন
ব্যাটারি গিলে ফেলার পরে কি হবে তার থেকে বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে শিশুকে যেন এরকম পরিস্থিতিতে পরতে না হয় তার উপায় বের করা। সেগুলো হতে পারে,
> বাটন ব্যাটারি ব্যবহৃত এমন যেকোনো জিনিস শিশুদের নাগালের বাহিরে রাখুন।
> সম্ভব হলে, শিশুকে বাটন ব্যাটারি ব্যবহৃত খেলনা দেয়া থেকে বিরত থাকুন।
> শিশুদের জন্য ব্যাটারিচালিত খেলনা ক্রয়ের সময় ব্যাটারির-কেস পার্মানেন্ট কি না তা ভাল করে দেখে নিন। এক্ষেত্রে সে খেলনা গুলোর ব্যাটারি শিশু চাইলেই খুলতে পারবে না।
> বাসায় অব্যবহৃত ব্যাটারি সাথে সাথে ফেলে দিন।
> শিশুর যেসমস্ত খেলনার ব্যাটারির কেস ঢিলে হয়ে গিয়েছে অর্থাৎ হালকা টানেই খুলে আসে এরকম খেলনায় ব্যাটারি রাখবেন না।
> শিশু যখন কোন ব্যাটারি চালিত খেলনা নিয়ে খেলে তখন তার দিকে খেয়াল রাখুন।
> শিশুর নিরাপত্তা ও জীবন রক্ষাকারী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি বন্ধু, প্রতিবেশী, কলিগদের সাথে আলোচনা করুন অথবা এই ব্লগটি শেয়ার করুন। এর জন্য হয়ত আপনার মাত্র কয়েক মিনিট প্রয়োজন হবে কিন্তু বেঁচে যাবে অনেক শিশুর জীবন।
আরো পড়তে পারেন- প্যারেন্টিং টিপস- বাচ্চাদের গতি অসুস্থতা বা মোশন সিকনেস হলে করণীয়
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
[/emaillocker]
1,400 total views, 1 views today