গুড প্যারেন্টিং এর জন্যে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো বাচ্চাদের শৈশব যেন আনন্দময় হয় তা নিশ্চিত করা। এই লেখায় পাবেন সেরকম কিছু পরামর্শ।
- গল্প লেখার পাল্লা! – শিশুরা গল্প শুনতে পছন্দ করে। রঙিন ছবিসহ মজার গল্পের বই হলে তো কথাই নেই! গল্পের প্রতি এই আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে আপনি তাকে আরো সৃজনশীল করে তুলতে পারেন। আজকাল শুধু রূপকথা নয় রীতিমত বৈজ্ঞানিক এক্সপেরিমেন্ট নিয়েও গল্পের বই আছে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানবাক্সের অরণী-রোবেকুবের মজার গল্প শোনাতে পারেন শিশুকে। এছাড়া পাল্লা লেগে গল্প লেখা যেতে পারে, জিতলেই পুরষ্কার! উৎসাহী না হয়ে উপায় আছে?
- ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তুলুন!- না, না আপনার আদরের সন্তানকে যুদ্ধে প্রশিক্ষিত করার কথা বলা হচ্ছে না! তবে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতে তো ক্ষতি নেই! বালিশ, চাদর, কাঁথা ইত্যাদি দিয়ে দুর্গ বানিয়ে দিন। দেখবেন কত খুশি হবে সে!
- বোর্ড গেম খেলুন– তাকে লুডু, চেকারস, দাবা ইত্যাদি বোর্ড গেম শেখান। এগুলো যেমন আনন্দ যোগাবে, তেমন বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশেও সহায়ক হবে। দাবার কথা বিশেষ ভাবে বলতে হয়। দাবা তো স্রেফ একটি খেলা না, একটি বিজ্ঞান!
- জাদুঘরে নিয়ে যান– প্রথম জাদুঘরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা প্রত্যেক শিশুর জন্যেই বিশেষ। পুরাতন আমলের বিশাল বিশাল খাট-পালঙ্ক, তিমি মাছের ফসিল, নৌকা, উল্কাখণ্ড, নানারকম জিনিস দেখে সে আনন্দে আপ্লুত হবে, জানার আগ্রহও তৈরি হবে। #আরো পড়তে পারেন- ঢাকার পাঁচটি জাদুঘর যেখানে সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে যেতে পারেন
- বালিশ লড়াই খেলুন!- একটু যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা হলে মন্দ কী? বালিশ লড়াইয়ের মত নির্দোষ খেলার মাধ্যমে যদি সবাই মিলে একটু মজা করা যায় তাহলে তো খুব ভালো! অন্তত খেলনা পিস্তল কিনে দেয়ার চেয়ে এটি অনেক গুণ ভালো একটি চয়েজ।
- নিজেরাই বানান মুভি!- আমাদের চারিপাশে কত গল্প! এই যে বাসার বেড়ালটার আহলাদ, মুরগীটার চঞ্চলতা! অথবা পাশের বাসার ছেলেটা বারান্দায় দাঁড়িয়ে অদ্ভুত সুরে গান গাইছে, কিংবা ফ্যানের বাতাসে বেলুনটার দুরন্তপনা, এসব সাধারণ দৃশ্যের সৌন্দর্য বুঝতে এবং ধারণ করতে শেখান তাকে। একটা হ্যান্ডিক্যাম নিয়ে তার সাথে নেমে পড়ুন মুভি বানাতে! এসব সাদামাটা দৃশ্যগুলো মুভিতে কেমন অন্যরকম দেখায় জেনে তার মুখ হা হয়ে যাবে!
- কার্ড গেম খেলুন– এই রে! এটা দেখলে তো অনেক অভিভাবকই ভীষণ চটে যাবেন। কী! আমার সন্তানকে জুয়া খেলা শেখানো! আসলে ব্যাপারটা তা নায়। কার্ড গেমগুলোতে অনেক হিসাব নিকাশের ব্যাপার রয়েছে, যা শিশুর গাণিতিক দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।
- মানুষের মাঝে যান– প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অথবা পুরাকীর্তি দেখার পাশাপাশি মানুষকে জানারও প্রয়োজন আছে। তাকে নিয়ে যান জনসমাগম বেশি এমন কোন জায়গাতে। চারিপাশ গভীরভাবে নিরীখ করতে বলুন। নতুন একটা খেলা খেলুন। কার মন খারাপ, কে বেশি ব্যস্ত, কার অঙ্গভঙ্গি হাস্যকর এসব খুঁটিয়ে বের করে তাদের সম্বন্ধে কল্পনা করতে বলুন। এই মানুষচর্চা ভবিষ্যতে তার অনেক কাজে আসবে।
- চিঠি লেখা শেখান– খুব দূরের কাউকে না, পরিবারের সদস্যদের মধ্যেই চিঠি দিক! এতে সে লেখার শৈলী অর্জন করবে, এবং পরস্পরের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটবে।
- পোকা অভিযান!- আশেপাশে যদি বাগান বা জংলা কোন জায়গা থাকে তাহলে ছেলেপুলের দল নিয়ে চলুন সেখানে! দারুণ এ্যাডভেঞ্চার হবে। ঘুরে ঘুরে পোকা সংগ্রহ করতে দিন তাদের। যে যতটি পোকা ধরতে পারবে সে বিজয়ী। এতে এ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পাওয়ার পাশাপাশি পোকাভীতিও কমে যাবে। তবে পোকাগুলোকে মারতে দিয়েন না যেন! সবারই বাঁচার অধিকার আছে, এই শিক্ষাটাও তার মাঝে গড়ে উঠুক।
আপনি শিশুকে কেমন করে গড়ে তুলতে চান তার ওপর নির্ভর করবে আনন্দ উপাদান। হয়তো সন্তানকে বিজ্ঞান মনস্ক করতে চান, তবে তাকে এখন থেকেই খেলার ছলে জানাতে পারে বৈজ্ঞানিক তথ্য, দেখাতে পারেন সহজ এক্সপেরিমেন্ট কিংবা উপহার দিতে পারেন বিজ্ঞানবাক্স। এছাড়া শিশুর পছন্দ হয়তো ছবি আকাঁয়। তাই তার আনন্দগুলো ছড়িয়ে দিন ক্যানভাস আর রং তুলিতে…
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,483 total views, 1 views today