সন্তান লালন পালন একটা জার্নির মতো। কখনো কখনো কঠিন জার্নিও। কিন্তু কখনো কখনো জীবনের প্রয়োজনে কিংবা অনাকাঙ্খিত কারণে এক হাতেই সন্তান লালন পালন করতে হয়। একা একা সন্তান লালন পালনকেই মূলত সিঙ্গেল প্যারেন্টিং বলা হয়। নিজের কাজ, নিজেকে সময়, অন্যান্য দায়িত্বের সাথে একা সন্তান লালন পালনের জার্নিটা কঠিনই বটে। আপনার এই কঠিন জার্নি হয়তো আমরা একেবারে সহজ করে দিতে পারবো না, কিন্তু সিঙ্গেল প্যারেন্টিং’য়ের কিছু পরামর্শ দিয়ে হলেও আমরা বিজ্ঞানবাক্স পরিবার থাকতে চাই আপনার সাথে।
একটা রুটিন ঠিক করুন
খাওয়া, ঘুম ও টুকিটাকি কাজের জন্য আপনার চাকরি কিংবা অন্যান্য কাজের সাথে মিলিয়ে একটা রুটিন ঠিক করে নিন। প্রতিদিন এই রুটিন মানার চেষ্টা করুন। যেমন, সন্তান স্কুলে পড়লে আপনার অফিস টাইম ও সন্তানের স্কুল টাইম মেলানোর চেষ্টা করুন, তার সাথে মিলিয়ে নিন সকালের নাস্তার সময়। সন্তানের স্কুল ও আপনার কর্মক্ষেত্র কাছাকাছি হওয়া ভালো। এতে সন্তান লালন কিছুটা সহজ হবে ও একই সাথে ঘুম থেকে ওঠা, একই সাথে স্কুলে ও অফিসের জন্য বের হওয়ার মাধ্যমে সন্তানকে কিছু কোয়ালিটি টাইমও দিতে পারবেন।
ব্যস্ততা থেকেই সময় বের করুন
নিজের দৈনন্দিন কাজ শেষ করে, বিষন্নতা, ক্লান্তি সবকিছুর পর হয়তো সন্তানের জন্য কম সময় বাঁচে। কিন্তু চাইলেই সেই সময়টাকে বাড়ানো যায়। যেমন-বাজার করতে গেলে সন্তানকে সাথে নিয়ে যান, এক সাথে খাবার তৈরি করুন! সন্তানের স্কুল টাইম ও আপনার অফিস টাইম মেলালেই কিন্তু অনেক সময় বের হয়ে আসে। এই সময়টাকেই আবার ভালোভাবে ব্যবহার করুন। এই সময়টাতে সন্তানের সাথে প্রচুর কথা বলুন। তার স্কুলের গল্প শুনতে চান, তার ভালো লাগা, খারাপ লাগা, পছন্দ, অপছন্দ শুনতে চান। মজা করুন, একসাথে তার প্রিয় কার্টুন দেখুন।
সপ্তাহে বা মাসে একটা স্পেশাল দিন রাখুন
সিঙ্গেল প্যারেন্টিংয়ের ক্ষেত্রে একা হয়তো পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় সন্তানকে দেয়া সম্ভব নাও হতে পারে। সেজন্য সপ্তাহে অথবা মাসে একটা স্পেশাল দিন রাখুন, যেটা কেবল সন্তানকে দিবেন। এই দিন তাকে নিয়ে ঘুরতে যান, তার প্রিয় কোন খাবার খেয়ে আসুন বাইরে থেকে, তাকে নিয়ে শপিংয়ে যান, ইত্যাদি যা যা ওর ভালো লাগে তা তা করার চেষ্টা করুন।
পরিচিতদের সাহায্য নিন
একহাতে আপনি হয়তো সব সামলে নিতে পারেন কিন্তু তারপরও যদি কখনো মনে হয় আপনার সাহায্য দরকার তখন কোন সংকোচ না করে কাছের বন্ধু কিংবা পরিবারের মানুষদেরকে সাহায্যের জন্য বলুন। সন্তানের জন্য হাউজ টিউটর রাখলে হাউজ টিউটরকে আগে থেকে বলে রাখুন ও একটু আলাদা নজরের বিষয়টা জানিয়ে রাখুন। হাউজ টিউটরের সাথে নিয়মিত আলোচনা করুন।
নিজেকেও সময় দিন
নিজের কাজ, কর্মক্ষেত্রের কাজ ও অন্যান্য কাজ করলে একজন মানুষের মাঝে ক্লান্তি, হতাশা, বিষন্নতা আসতে পারে। এইসব কাটিয়ে ওঠার জন্য নিয়ম করে নিজেকে কিছু সময় দিন। বন্ধুদের সাথে দেখা করুন, পছন্দের কোন জায়গায় ঘুরে আসুন সময় করে (চাইলে সন্তানকে সাথে নিয়ে যান), প্রিয় গান শুনুন পরিমিত অবসরে।
আপনার সন্তান বেড়ে উঠুক সঠিকভাবে। সে একই সাথে সফল ও মানবিক হয়ে গড়ে উঠুক। আপনার এই জার্নির প্রতি থাকলো আমাদের অকৃত্রিম শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,500 total views, 1 views today