Show Categories

শিশু কেন ভয় পায়? ভয় দূর করতে বাবা-মায়ের করণীয় কি?…

child fear

ভয় একটি খুব স্বাভাবিক মানবিক অনুভূতি। ভয় নেই এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। তবে ভয় তখনই ক্ষতিকারক হতে পারে যদি তা অহেতুক, বিনা কারণে সৃষ্টি হয়। শিশুদের মধ্যে এমন প্রবনতা দেখা যায়। শিশুরা সাধারণত উচ্চ শব্দ, কুকুরের ডাক, অন্ধকার ইত্যাদি বিষয়ে ভয় পায়। অনেক শিশুরা আবার নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে, নতুন অভিজ্ঞতায় ভীতি অনুভব করে। এই ভয়গুলো থেকে তাদের দূরে রাখতে বাবা-মায়ের বিশেষ ভূমিকা রাখা আবশ্যক।

child fear

ভয় কেন হয়?

একদিকে মানুষের মধ্যে ভয় আসে পূর্ব-পুরুষদের অভিজ্ঞতা থেকে, অন্য কথায় জিনগতভাবে। আদিম যুগে মানুষ অন্ধকারে বেশি বিপদে পড়ত, তাই তো এখনো আমরা অন্ধকারকে ভয় পাই। অন্যদিকে বিহেভিয়ার তত্ত্ব অনুযায়ী ভয় মানুষ শিখে থাকে। একটু অদ্ভুত শোনালেও বিষয়টি তাই। যেমন-কেউ কোনো একটি বিষয়ে ভয় পেয়ে চিৎকার দিল, সঙ্গে সঙ্গে পাশের শিশুর মধ্যেও ভয় সঞ্চারিত হলো এবং এই ভয়টি তার মধ্য থেকে যেতে পারে, ধীরে ধীরে বেড়ে যেতে পারে। ভয়ের বিষয়টি এড়িয়ে চললে শিশুর মধ্যে ফোবিয়া তৈরি হতে পারে।

ভয়ের প্রতিক্রিয়া

ভয়কে চিনতে হলে ভয়ের স্বাভাবিক শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলো জানতে হবে। যেমন-বুক ধড়ফড় করা, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস বেড়ে যাওয়া, ঘেমে যাওয়া, হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, মাথার তালু বা হাত-পায়ের তালু গরম হয়ে যাওয়া, বমি আসা, বুকে ব্যথা অনুভব করা, শরীরে কোথাও ব্যথা অনুভব করা, শরীর দুর্বল অনুভব করা, পেটে অস্বস্তি হওয়া ইত্যাদি। অনেক সময় এগুলো দেখে মানুষ আরো ভয় পেয়ে যায়। মনে করে এগুলো শারীরিকভাবে ক্ষতিকর কোনো বিষয়। আসলে তা নয়, ভয় পেলে এগুলো হতেই পারে। ভয় না থাকলে এগুলো থাকবে না।

আরও পড়তে পারেন- আপনার শিশু বিষণ্ণতায় ভুগছে? দেখে নিন কারন ও প্রতিকার!

শিশুকে ভয় থেকে দূরে রাখতে বাবা-মায়ের করনীয় :

১। নিরীখ করুন প্রখর ভাবে

তাকে নিরীখ করুন প্রখর ভাবে। কোন পরিস্থিতিতে, কী অবস্থায়, কাদের উপস্থিতিতে শিশু ভয় পায় তা সম্পর্কে অবগত হওয়া আবশ্যক। তার সাথে থাকুন, সে যা ভয় পাচ্ছে তার মুখোমুখি হতে সাহায্য করুন। ধরুন সে ফেরিওলাকে ভয় পাচ্ছে। সেক্ষেত্রে তাকে তার কাছে নিয়ে আসুন। পরিচিত করিয়ে দিন। বোঝান যে সে কোন ক্ষতি করবে না। সে কোন দৈত্ত-দানব নয়, স্বাভাবিক একজন মানুষ।

২। ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার

তাকে বোঝান, ভয় পাওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপার। সবাই ভয় পায়, সুতরাং সে আলাদা কিছু না। এই বলে সাহস যোগান যে ভয়ের মুহূর্তে সবসময় তার পাশে থাকবেন। দুজন একসাথে থাকলে কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না।

child fear

৩। অভিনয়ের মাধ্যমে ভয়ের ধারনা দিন

অভিনয়ের মাধ্যমে শিশুকে ভয়ের জিনিসগুলো সম্পর্কে স্বাভাবিক ধারনা দিতে চেষ্টা করুন। খেলাচ্ছলে শিশুকে বুঝিয়ে দিন। যেমন অনেক শিশু ডাক্তারের কাছে যেতে ভয় পায়। এক্ষেত্রে আপনি খেলাচ্ছলে বোঝাতে পারেন যে চিকিৎসক আমাদের বন্ধু, আমাদের অসুখ হলে ডাক্তার আমাদের সাহায্য করে। তবে শিশুর ভয় আস্তে আস্তে কেটে যাবে।

৪। একা না রাখা

একটু বড় হলেই মা বাবা শিশুকে আলাদা রুমে রাখার অভ্যাস গড়ার জন্য বোঝাতে থাকে। তাকে বলা হয় যে তুমি বড় হচ্ছো। এখনও একা রুমে না থাকতে পারলে সবাই তোমাকে নিয়ে উপহাস করবে। আর এক্ষেত্রে শিশুটি কিছুদিন কান্নাকাটি করলেও নিজের ভয়কে সে নিজের মাঝে রাখতে শিখে যায়। এতে তার মানসিক অবস্থার ওপর যেমন চাপ পড়ে তেমনি পরিবারের সাথেও দূরত্ব বাড়তে থাকে। তাই শিশুকে একা রুমে রাখার আগে ভালোভাবে বুঝে নিন সে অন্ধকারে ভয় পায় কি না।

৫। নিজের ভীতির জায়গা শেয়ার করুন

নিজের ভীতির জায়গাগুলো শিশুর সাথে শেয়ার করতে যাবেন না, এতে শিশু নিজের ভয়ের ব্যাপারগুলোর পাশাপাশি আপনার ভীতি নিয়েও ভয় পাবে। তাই তাদের সামনে নিজের ভয়কে প্রশ্রয় দেওয়াটা উচিত হবে না।

শিশুকে সব সময় ভালো একটি পরিবেশ দেওয়ার চেষ্টা করুন। তাকে ভয় দেখিয়ে নয়, ভালোবেসে কথা বলুন। শিশু যখন ভয় পাচ্ছে দেখছেন তখন তাকে সাহস যোগান। তাকে একা না ছেড়ে তার সঙ্গী হয়ে ভয় মোকাবেলা করতে সাহায্য করুন।

আরও দেখতে পারেন- আপনার সন্তানকে বেশি করে গান শুনতে দিন। কারণ…

বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

 4,384 total views,  2 views today

What People Are Saying

Facebook Comment