সন্তানের লেখাপড়া কিসের উপর নির্ভর করে? বাবা-মা, স্কুল নাকি হাউজ টিউটর? সাধারণত আমরা এভাবেই চিন্তা করি। কিন্তু আরো একটা ফ্যাক্টর থেকে যায়, তা হলো সন্তানের লেখাপড়া কতটা সহজ করা যায় ও পড়ানোর ধরণ সন্তানের জন্য কতটা উপযোগী হলো। সবসময় মুখস্থ আর একটা গৎবাঁধা নিয়মে শেখাটা সন্তানের জন্য কঠিন হয়ে যায়। সেজন্য কিছু নির্দিষ্ট পরিকল্পনার মাধ্যমে সবাই মিলে সন্তানের লেখাপড়া আরো সহজ ও উপভোগ্য করে তোলার জন্যই আজকের বিজ্ঞানবাক্সের প্যারেন্টিং টিপস।
পরিকল্পনা তৈরি করুন
আমরা বিশ্বাস করি পড়ালেখার কোন পরিকল্পনা কিংবা মাপকাঠি নেই। যার যখন যা পড়তে ভালো লাগে তার তখন তাই পড়া উচিত। কিন্তু তারপরও একাডেমিক পড়ালেখা ওৎরাতে হয় বলে আমাদের একটা পরিকল্পনা করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বছরের শুরুতে সন্তানের স্কুলের সিলেবাস পর্যালোচনা করে একটা প্ল্যান তৈরি করুন। প্ল্যানটা মাসিক হতে পারে, হতে পারে সেমিস্টার নির্ভর। যেমন-প্রথম সাময়িক পরীক্ষার সিলেবাস নিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা শেষ করার জন্য একটা রুটিন তৈরি করে সে অনুযায়ী পড়ান। তাহলে পড়ালেখার চাপ অনেক কমে যাবে। এই প্ল্যানটা হাউজ টিউটরকে সাথে নিয়েও করতে পারেন।
সুন্দর পরিবেশ তৈরি করুন
সব কাজের জন্যই সুন্দর পরিবেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। পড়ালেখার জন্যও তাই। একটা সুন্দর পরিবেশ হলে পড়ালেখায় পূর্ণ মনোযোগ দেয়া যায়। এক্ষেত্রে সন্তানের রুমটাকে আলাদা করুন। পড়ার টেবিল বিছানা থেকে দূরে রাখুন। রুমে আরামদায়ক তাপমাত্রা, ভালো আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখুন। পড়ার রুমের দেয়ালে সন্তানের বয়স অনুযায়ী শিক্ষণীয় ক্যালেন্ডার, পোস্টার ইত্যাদি রাখতে পারেন। যেমন-দেয়ালে তার পছন্দের কোন ছড়াকারের ছড়া লেখা পোস্টার রাখতে পারেন। সন্তানের পড়ার রুম থেকে টেলিভিশন যেন দূরে থাকে তা খেয়াল করুন। সোজাকথা সন্তানের পড়ার রুম যথাসম্ভব শান্ত ও সুন্দর রাখার চেষ্টা করুন।
পড়ালেখাকে বাস্তবসম্মত করে তুলুন
শুধু বইয়ে আটকে থাকলে তা সন্তানের শেখাকে কঠিন করে তুলবে। মাঝে মাঝে পড়ালেখাকে সহজ করে তোলার জন্য বইয়ের পড়াটাকেই তাকে সামনে দেখিয়ে দিন। যেমন-মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পড়ার সময় তাকে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর দেখিয়ে আনতে পারেন। বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলোকে পড়াতে পারেন গল্পের মতো করে। কিংবা বিজ্ঞানবাক্স থেকে দেখাতে পারেন বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট। যেমন-আলো সম্পর্কিত কোন অধ্যায় পড়াতে আলোর ঝলক বিজ্ঞানবাক্স, চুম্বক সম্পর্কিত কোন অধ্যায় পড়ানোর সময় চুম্বকের চমক বিজ্ঞানবাক্স ব্যবহার করতে পারেন। সোজা কথা পড়ালেখাকে গল্পের মতো সুন্দর ও বাস্তব করে তুলতে হবে।
দায়িত্ব ভাগ করে নিতে পারেন
একজনের পক্ষে সবসময় সন্তানকে সময় দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। সেক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের মাঝে দায়িত্ব ভাগ করে দিতে পারেন। কর্মজীবী বাবা-মার জন্য দায়িত্ব ভাগ করে নেয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় বাবা গণিত ভালো বুঝাতে পারেন, মা পারেন ইংরেজি, পরিবারের অন্য কোন সদস্য বেশ ভালো বোঝাতে পারেন বিজ্ঞান। সেক্ষেত্রে যে যেটা ভালো বোঝাতে পারেন সে সেটা সন্তানকে পড়াতে পারেন।
ফিডব্যাক নিন ও ধৈর্যশীল হোন
সন্তানের জন্য কোন কোন পড়া বুঝতে স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি সময় লাগতে পারে। এটাকে স্বাভাবিকভাবে নিন। ধৈর্য ধরে ওই একই পড়া বুঝানোর জন্য বিশেষ কোন পরিকল্পনা করতে পারেন। সন্তানের পড়ালেখার নিয়মিত ফিডব্যাক নিন, তাকে উৎসাহিত করুন। কোন কিছু সুন্দর করে বুঝতে পারলে কিংবা নিজে থেকে কোন কিছু করলে তাকে অনুপ্রাণিত করুন। নিয়মিত ফিডব্যাক না নিলে সন্তান পড়ালেখায় আগ্রহ তেমন ধরে রাখতে পারে না। আর কোন কিছু বুঝতে সমস্যা হলে সেটা নিয়ে নেতিবাচক আচরণ করলে সন্তান না বুঝেই হয়তো ওই বিষয়কে এড়িয়ে যাচ্ছে।
সবসময় হাউজ টিউটর কিংবা স্কুল শিক্ষকের উপর নির্ভরশীল না থেকে আপনার হাতে যতটুকু সময় থাকে তা দিয়ে সন্তানকে সহজ ভাবে পড়ানোর চেষ্টা করুন। সময় না থাকলেও সন্তানের জন্য কিছুটা সময় বের করে নিন। সন্তানের ভবিষ্যত সুন্দর করার জন্য একটু সময়তো বের করা যেতেই পারে! না কি?
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,799 total views, 1 views today