শিশুর সুন্দর হাতের লেখার কৌশল নিয়ে ধারাবাহিক পর্বের আজ তৃতীয় ভাগে এসে আমরা চমৎকার কিছু ধারণা সম্পর্কে জানবো। হাতের লেখা সুন্দর হওয়ার জন্যে শুধুই হাতে কলম নিয়ে নিয়েই বসে থাকলে হবে না, করতে হবে আরো বেশ কিছু কাজ। সেসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়াদি থাকছে আজ।
হাতের লেখা সুন্দর হয়ে উঠার জন্যে এর আগেই হাতের গড়ন এবং গতিপথ ঠিকমত গড়ে তুলতে হবে। হাতের এবং আঙ্গুলের ছোট ছোট পেশীগুলির একটি সিরিজ রয়েছে যা হাতের লেখা সুন্দর করা এবং সেটা উন্নত করতে সহায়তা করে। হাতের পেশী গুলোকে সঠিক গড়ন এবং সেগুলোর উপকারিতা দিয়েই তাহলে শুরু হোক।
কৌতুহলী মনকে দিন গোলকধাঁধার উপকরণ–
গোলকধাঁধা মেলানো সব সময়ে একটি মজার ব্যাপার। শিশুরা এটা মিলানোর জন্যে সব সময় লেগে থাকে। বিভিন্ন দিক থেকে একই বিষয় তারা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে। লেগে থাকার যে অভ্যাস সেটা হয়ত সে এখান থেকে শেখা শুরু করে। শিশুরা এখান থেকে যা যা শেখে-
- সমস্যা সমাধানের দক্ষতা তারা এখান থেকে শিখতে পারে।
- ধৈর্য এবং একাগ্রতা শেখার সেরা মাধ্যম হবে।
- কোন বিষয়কে গভীরভাবে চিন্তা করার দক্ষতা বাড়বে।
- একই সাথে অনেকগুলো বিষয় মনে রাখতে পারবে।
- গোলকধাঁধা সমাধান চোখ এনং হাতের কাজের মধ্যে সামঞ্জস্যতা নিয়ে আসবে।
আরো জানুন- সন্তানের জন্য নির্বাচন করুন সঠিক খেলনা
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
বাসায় বানানো খেলনায় হবে সমাধান –
আঙ্গুলের মাসল এবং পেশী সুসংগঠিত করার জন্যে অন্যতম একটি খেলনার কথা বলা যাক। যেহেতু এটা বাচ্চার কাজেই বেশি ব্যবহৃত হবে তাই খেলনাই বলা যায়। আমাদের সবার বাসায়ই তো আটা ময়দা থাকে, তো রুটি বানানোর জন্যে আমরা যেভাবে আটা মাখাই সেভাবে আটা মাখিয়ে গোল করে শিশুকে দিন। সে হাতে নিয়ে সেটা দলাই-মলাই করবে। এতে করে তার হাতের সব মাশল একই সাথে কাজ করবে। হাতের মাংশ পেশীতেও এটা চমৎকার কাজা করে। হাতের লেখা সুন্দর করার জন্যে হাত ও আঙ্গুলের মাসলের সুসংঠন খুব জরুরী।
এবার রঙ্গিন মার্কার, হবে সঠিক ব্যবহার –
আমরা বাচ্চাদের নিয়ে লেখার সময় সাধারনত পেন্সিল বা কালো বল পয়েন্ট নিয়ে বসি। এতে করে তার যেটা হয় নিজের লেখার পার্থক্য সে বুঝতে পারে না। তাই মোটা দাগের বিভিন্ন কালারের মার্কার পেন নিয়ে লেখা যেতে পারে। সে যখন বিভিন্ন কালি দিয়ে বিভিন্ন লেখা লিখবে তখন সে নিজেই তার দুইটি অক্ষর বা চিত্রের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে পারবে। আর শিশুরা তো সব সময়ই রঙ্গিন জিনিসের উপর বেশি আকৃষ্ট হয়। হাতের লেখা সুন্দর করা মানেই শুধু অক্ষর লিখলেই সুন্দর হবে এমন নয়। শিশুকে বুঝতে হবে সে নিজে একটি লিখাকে কীভাবে উপস্থাপন করছে। এবং এভাবে রঙ্গিন মার্কার ব্যাপারটাকে সুন্দর করে তোলে।
এবার ঘর থেকে বাইরে –
শিশুকে নিয়ে একটু বাসার বাইরে চলে যেতে পারেন। বোর্ড আর চক হাতে দিয়ে তাকে ছেড়ে দিন প্রকৃতির মাঝে। তাকে বলেন সে যা দেখবে সেটা যেন আঁকতে চেষ্টা করে। এতে করে তার কল্পনাশক্তি যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি সেটাকে বোর্ডে তুলতে নিজের দক্ষতাও বাড়বে। উপস্থাপন দক্ষতা যত বৃদ্ধি পাবে তত তার মনোযোগ বৃদ্ধিপাবে। সে আনন্দ নিয়ে সব কাজ করতে শিখবে। হাতের লেখা সুন্দরের জন্যে এটা খুবই উপযোগী।
আমরা যেসব পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করলাম। এটা যে শুধু একটি শিশুর হাতের লেখাই সুন্দর করবে তা কিন্তু নয়। একই সাথে তার চিন্তাশক্তি, কল্পনাশক্তি এবং কোন কাজের প্রতি লেগে থেকে সেটা সম্পন্ন করার মানুষ্যিকতা গড়ে উঠবে। কাজকে এভাবেই আনন্দের সাথে পরিবেশন করতে হবে। “এটা লিখ, ঐ লিখ” এভাবে তাকে প্রেসার দিয়ে হয়ত কিছু লেখা হবে কিন্তু সেটা তার মননশক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করবে না। অভিভাবক হিসেবে আপনাকে অনেক না হলেও শিশুকে একান্ত কিছু সময় তো দিতেই হবে।
শিশুর হাতের লেখা সুন্দর সিরিজের আগের পর্বগুলো পড়ুন এখানে-
সুন্দর হোক শিশুর হাতের লেখা: শুরুতেই মৌলিক বিষয় ( প্রথম পর্ব)
সুন্দর হোক শিশুর হাতের লেখা: লেখা হবে আনন্দে (২য় পর্ব)
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,742 total views, 1 views today