বিদ্যুৎ আমাদের প্রতিদিনের জীবনে যেমন অপরিহার্য তেমনি বিপজ্জনকও। প্রতি বছর অনেক মানুষ বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মারা যায়। তাদের মধ্যে শিশুর সংখ্যাই বেশি। কারণ শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ও এর বিপজ্জনক দিক সম্পর্কে কোন ধারণা নেই। তাই শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে বাবা মাকেই সচেতন হতে হবে। চলুন আজকের বিজ্ঞানবাক্স ব্লগ থেকে শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করতে আমাদের করণীয় সম্পর্কে জেনে নিই-
বৈদ্যুতিক বোর্ডে কভার ব্যবহার করুন
বাসায় ব্যবহৃত ইলেকট্রিক বোর্ডের খোলা সকেট গুলোতে শিশুরা আঙ্গুল দিয়ে দিতে পারে কিংবা কোন সরু বস্তুকে হাত দিয়ে ধরে তা সকেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দিতে পারে। এটা খুবই বিপজ্জনক। সেজন্য বাসার ইলেকট্রিক বোর্ডগুলো শিশুদের নাগালের বাইরে একটু উঁচুতে লাগানো উচিত। সেটা সম্ভব না হলে, ইলেকট্রিক বোর্ডের সকেটের জন্য কভার ব্যবহার করতে হবে। বাজারে প্লাস্টিকের তৈরি কভার পাওয়া যায়। অব্যবহৃত সকেটগুলো বোর্ড থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে কিংবা ভালো করে বন্ধ করে দিতে হবে।
মাল্টিপ্লাগ ব্যবহারে আরও সচেতন হোন
শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচানোর জন্য মাল্টিপ্ল্যাগ ব্যবহারে সচেতনতা বাড়াতে হবে। মাল্টিপ্ল্যাগের ব্যবহার শেষ হলে সাথে সাথে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতে হবে। মাল্টিপ্ল্যাগ ব্যবহারের সময়ও শিশুদেরকে মাল্টিপ্লাগ থেকে দূরে রাখতে হবে। অনেক সময় আমরা মোবাইল চার্জার অকারণে সকেটে লাগিয়ে রাখি। এতে শিশুরা চার্জারের কর্ড দাঁত দিয়ে কামড়াতে পারে। ঘটতে পারে বড় কোন দুর্ঘটনা। সবকিছুর প্রতিই শিশুদের কৌতুহল বেশি থাকে, আর হাতের নাগালের বস্তুক মুখে দেয়া শিশুদের সাধারণ অভ্যাস।
বৈদ্যুতিক যন্ত্র শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন
শিশুরা সব কিছুর ব্যাপারে কৌতূহলী হয়। পোর্টেবল ইলেকট্রিক ডিভাইস বহন করা সহজ বলে তারা হাতের নাগালে পেলে তা নিয়ে খেলতে পছন্দ করে। সেজন্য ব্লেন্ডার, হেয়ার ড্রায়ার, রাইস কুকার, ইলেকট্রিক রেজার, হিটার ইত্যাদি পোর্টেবল ইলেকট্রিক ডিভাইস শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। কোথাও লুকিয়ে রাখাই উত্তম। যখন প্রয়োজন হবে তখন আবার নিয়ে ব্যবহার করা যাবে। কাজ শেষে আবার লুকিয়ে রাখতে হবে।
ইলেকট্রিক সুইচ শিশুদের থেকে দূরে রাখুন
টিভি, ফ্রিজ ও এমন অন্যান্য ডিভাইস যেগুলো লুকিয়ে রাখা যায় না, সেগুলোর সুইচ ও কর্ড শিশুদের নাগালের বাইরে রাখতে হবে। এইসব ডিভাইসের প্রতি শিশুদের আসক্তি বেশি থাকে বিধায় তারা নিজে থেকে এইসব চালানোর চেষ্টা করলে অসাবধানতাবসত দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। চালানোর দরকার হলে বড় কেউ এসে ঠিক করে দিতে হবে।
শিশুকে ইলেকট্রিক সেফটি সম্পর্কে জানান
শিশু একটু বড় হলেই তাকে ইলেকট্রিক সেফটি সম্পর্কে জানাতে হবে। তাকে ইলেকট্রিসিটির সাধারণ ধারনা দিন। আমাদের দৈনন্দিন ব্যবহৃত কোন কোন বস্তু বিদ্যুৎ অপরিবাহী ও কোনগুলো বিদ্যুৎ পরিবাহী তা সম্পর্কে জানান। ইলেকট্রিসিটি কিভাবে বিপজ্জনক হতে পারে জানান। বিদ্যুৎ পানির সংস্পর্শে আসলে কতটা ভয়াবহ হতে পারে তার ধারণা দিন।
এছাড়াও বৈদ্যুতিক নিরাপত্তার জন্য ঘরে ও বাইরে কিছু কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে নিরাপদ থাকা সম্ভব। চলুন জেনে নিই তেমন কিছু টুকিটাকি।
• সার্কিট ব্রেকার না থাকলে ফিউজে সাধারন তার ব্যবহার না করে নাইক্রোম তার ব্যবহার করুন। নাইক্রোম তার ব্যবহার করলে ইলেকট্রিক শকের সাথে সাথে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। অন্যতারে তা হবে না।
• রঙ্গিন আলো জ্বলে এমন কোন যন্ত্রপাতি বাসায় রাখা যাবে না। রঙ্গিন আলো শিশুদের আকৃষ্ট করে। ফলে সে যন্ত্রটি ধরতে চাইবে।
• তাপ সঞ্চালন করে এমন কোন বস্তুর ( যেমন-চুলা ) পাশে যেন বৈদ্যুতিক তার না থাকে।
শিশুদের বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করার জন্য বাবা-মার সচেতনতা অনেক বড় ভূমিকা রাখে। আপনার সন্তান ভালো থাকুক এটাই আমাদের কামনা।
তবে তড়িৎ কিন্তু মোটেও ভয়ের বিষয় না! তড়িতের দারুণ মজার ২০টি এক্সপেরিমেন্ট নিয়ে আছে আমাদের তড়িৎ তাণ্ডব বিজ্ঞানবাক্স!
আপনার সন্তানকে ছোট থেকেই ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পাঠ দিন!
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
তথ্যসূত্র-momjunction
1,917 total views, 2 views today