শিশুদের ত্বক অনেক স্পর্শকাতর ও নরম হয় বিধায় তাদের ত্বকে নানা ধরণের রোগের সংক্রমণ দেখা দেয় সহজে। এইসব রোগের মধ্যে শিশুদের একজিমা অন্যতম। একেবারে নবজাতক অবস্থা থেকে ৫ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের অ্যাকজিমা’য় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। সাধারণত নবজাতকের মুখে, মাথার তালুতে, কপালে, হাতে ও ঘাড়ে অ্যাকজিমা দেখা যায়। কারও কারও হাঁটু, গোঁড়ালি, কবজিতেও অ্যাকজিমা হতে দেখা যায়। আজকের ব্লগে আমরা শিশুদের একজিমা হওয়ার কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানবো।
একজিমার কারণ
• পরিবারের কারও একজিমা থাকলে সন্তানেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
• শরীরে আর্দ্রতা কম থাকা ও জীবাণুর সংস্পর্শে আসলে হতে পারে।
• পরিবারের কারও অ্যাজমা থাকলেও পরবর্তীতে শিশুর একজিমা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
• অ্যালার্জির প্রবণতা বাড়ানো খাবার (যেমন-পিনাট বার, গরুর দুধ, মটরশুটি, সামুদ্রিক মাছ ইত্যাদি) খেলে একজিমার প্রবণতা বাড়ে। অনেকক্ষেত্রে শিশুকে দুধ খাওয়ানো মা এই সকল খাবার খেলেও শিশু একজিমায় আক্রান্ত হতে পারে।
• পরিবারের কারো আমবাত ও হাঁপানি থাকলে শিশুরা একজিমায় আক্রান্ত হতে পারেন।
একজিমার লক্ষণ
• শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় ও কোথাও কোথাও ফোসকা দেখা যায়।
• ফোসকার ভেতর হলুদ রঙয়ের তরল দেখা যায়। ফোসকা ফাটালেও হলুদ রঙয়ের তরল বের হয়ে আসে।
• ত্বকে চুলকানি দেখা দেয়। চুলকানোর ফলে ত্বক লালচে হয়ে যায়।
• ত্বকে ফাটা দেখা দেয়। যা শিশুর জন্য বেশ যন্ত্রণাদায়ক।
• একজিমায় আক্রান্ত হলে শিশুর অতিরিক্ত হাঁচি, কাশি ও শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে দেখা যায়।
শিশুদের একজিমা’র প্রতিরোধ
চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা রোগীর মেডিকেল হিস্ট্রি ও ফ্যামিলি হিস্ট্রি দেখে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। তাছাড়া ঘরোয়া ভাবে কিছু পদক্ষেপও একজিমার প্রতিকার ও প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ঘর পরিষ্কার রাখতে হবে
একজিমা প্রতিকার ও প্রতিরোধের জন্য ঘর সবসময় পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখতে হবে। ঘরে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। রুমের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য হিউমেডফায়ার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সাবান ও ডিটারজেন্ট পরিহার করতে হবে
একজিমাতে আক্রান্ত হলে সাবান ও শ্যাম্পু এককথায় ক্ষারীয় পদার্থ ব্যবহার করা বাদ দিতে হবে। আক্রান্ত শিশুর কাপড়-চোপড়ে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করলেও ভালোভাবে ধুতে হবে যেন কাপড় থেকে ডিটারজেন্ট পুরোপুরি সরে যায়।
ঢিলেঢালা ও সুঁতি কাপড় পড়তে হবে
একজিমায় আক্রান্ত শিশুকে ঢিলেঢালা ও সুঁতি কাপড় পড়াতে হবে। কম ও পাতলা কাপড় পড়ানো উচিত। অতিরিক্ত টাইট ও সেনথেটিক কাপড় পড়ালে শিশুর একজিমা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে।
গরম পানিতে গোসল ও ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
আক্রান্ত শিশুকে দিনে অন্তত দু-বার হালকা কুসুম গরম পানিতে গোসল করাতে হবে। শিশুর ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য পেট্রোলিয়াম জেলি, অলিভ অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। অ্যালোভেরা জেলও উপকারী। অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারে ত্বকের প্রদাহ কমে।
শিশুদের একজিমা উদ্ধিগ্ন হওয়ার মতো তেমন গুরুতর কোন সমস্যা নয়। কিন্তু সঠিক পরিচর্যা্র মাধ্যমে রোগ না সারালে দীর্ঘদিন ধরে ভোগাতে পারে।
বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সায়েন্স কিট “অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স” সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন।
তথ্যসূত্র- webmd
1,821 total views, 1 views today