রুহানের সকাল হতো মোবাইল গেম খেলে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অবসরে কিংবা কখনো কখনো অন্য কাজ ফেলেও পড়ে থাকতো মোবাইল গেম নিয়ে। বয়স কত ওর? খুব বেশি না। ৯ বছর মাত্র। পড়ে তৃতীয় শ্রেণীতে। খুলনার এসওএস হারম্যান মেইনার স্কুলে।
ও যে পড়ালেখায় খারাপ তাও বলা যাবে না। পড়ালেখাও করে। কিন্তু মোবাইল গেমে আসক্তিটা দিন দিন বাড়ছিলো।
ও বাবা-মা দুজনই চাকরি করে। ও থাকে নানুর কাছে। শুরুর দিকে স্কুলের পর নানুর সাথে গল্প করার পর অবসরে খেলতো মোবাইল গেম। ধীরে ধীরে এই মোবাইল গেম তার অনেকটা সময় নষ্ট করছিলো। বলা যায় সে একদম মোবাইল গেমে আসক্ত হয়ে গেছে।
এই চিন্তা বাবা-মা, তার নানু সবাইকেই পেয়ে বসে। অনেক ভাবেই চেষ্টা করা হয় রুহানের মোবাইল আসক্তি দূর করতে। কিন্তু কোনভাবেই কোন কিছু হচ্ছিলো না। সে দু-একদিন মোবাইল গেম থেকে দূরে থাকলেও আবার দু-একদিন পরে ঠিকই মোবাইল নিয়ে বসে পড়ে। আর একবার গেম খেলা শুধু করলে নাওয়া খাওয়া কোন কিছুর কথা খেয়াল থাকে না।
সময় যাচ্ছে, ওর আসক্তি দিনদিন বাড়ছে। বাড়ছে ওর বাবা-মার চিন্তাও।
রুহানের মতো এমন অনেক গল্পই আমাদের আশেপাশে আছে। বেশিরভাগ বাচ্চারাই মোবাইল গেমের প্রতি এতটাই আসক্ত হয়ে পড়ে যে বাবা-মা চিন্তা বেড়ে যায়। কী করবে? কী করবে না? কী করলে এমন আসক্তি থেকে সন্তানকে বাঁচানো যাবে! এমন অনেক কিছুই ভাবনায় থাকে সবাই।
রুহানের বাবা-মাও ভাবতেন।
ভাবতে ভাবতেই একদিন তাঁরা খুলনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় গেলেন। এদিক-সেদিক ঘুরতে ঘুরতে আসলেন বিজ্ঞানবাক্স স্টলে। বিজ্ঞানবাক্স স্টলে বাচ্চাদের সাথে বাবা-মাদের ভীড় দেখে এমনিতে ঢুকলেন দেখার জন্য। সাথে রুহানও ছিলো।
ঢুকেই রুহান খুব মনোযোগ দিয়ে বিজ্ঞানবাক্সের বিভিন্ন ডেমো এক্সপেরিমেন্ট দেখতে লাগলেন। পাশ থেকে রুহানের মনোযোগ দেখছিলেন রুহানের বাবা-মা। দেখে অবাক হচ্ছিলেন। কারণ রুহান এমন মনোযোগ দিয়েই ভিডিও গেম খেলে।
বেশ কিছু এক্সপেরিমেন্ট দেখে রুহান বাবা-মাকে বললেন-আমাকে বিজ্ঞানবাক্স নিয়ে দাও।
রুহানের বাবা-মা সম্ভবত এই সময়ের অপেক্ষাতেই ছিলেন।
রুহানকে জিজ্ঞেন করলেন- বিজ্ঞানবাক্স আর ভিডিও গেমসের মধ্যে তোমাকে যে কোন একটা পছন্দ করতে হবে।
রুহানের উত্তরের জন্য রুহানের বাবা-মা ও প্রস্তুত ছিলেন না। কারণ রুহান বললো, তার বিজ্ঞানবাক্সই চাই। বিজ্ঞানবাক্স নিয়ে দিলে সে আর মোবাইল গেমস খেলবে না।
এরপর রুহানের বাবা-মা রুহানকে পুরো ১ সেট বিজ্ঞানবাক্স কিনে দেয়।
রুহানের জন্য শুভকামনা। ও যেন ওর অবসর সময়টা বিজ্ঞানের সাথে কাটাতে পারে।
মোবাইল গেম আসক্তি দূর হওয়ার গল্পটা রুহানের। কিন্তু বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে এমন অনেক রুহানের গল্প আছে, যারা বিজ্ঞানবাক্সের মাধ্যমে শিখছে মজার মজার বিজ্ঞান ও বিজ্ঞান শেখায় আগ্রহ বাড়ছে তাদের।
আপনি আপনার সন্তানকে বিজ্ঞানবাক্স নিয়ে দিতে পারেন। তাকেও করে তুলতে পারেন বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী।
বাংলাদেশের প্রথম ও একমাত্র সায়েন্স কিট বিজ্ঞানবাক্স সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,709 total views, 1 views today