Show Categories

সন্তানকে দায়িত্বশীল করে তুলুন; আপনার জন্যই ৭টি টিপস

দায়িত্বশীল

দায়ত্বশীলতা মানুষকে নিয়ে যেতে পারে অন্যন্য উচ্চতায়। আবার দায়িত্বশীলতার অভাব মানুষের সফলতার পেছনে অনেক বড় অন্তরায়ও হতে পারে। বোঝাই যাচ্ছে দায়িত্বশীলতার গুরুত্ব। কিন্তু শিশুদের আবার দায়িত্বশীলতা কী? ছোট মানুষ, ওরা এত সবের কী বোঝে? এমন ভাবছেন কি? দায়িত্বশীলতা মানুষের মাঝে হুট করে একদিনে জন্ম নেয় না। এটাও চর্চার বিষয়। সেজন্য ছোটবেলা থেকেই ধীরে ধীরে আপনার সন্তানকে দায়িত্বশীল করে গড়ে তুলতে হবে, তবেই সে বড় হয়ে দায়িত্বশীল মানুষ হতে পারবে। তারই প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজে তার অবধান ও তার দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে জানান। ছোট থেকে ছোট ছোট দায়িত্ব নিতে নিতেই সে প্রস্তুত হবে জীবনের বড় বড় দায়িত্বগুলোর জন্য। বিজ্ঞানাবাক্স ব্লগ থেকে জেনে নিন কিছু টিপস।

দায়িত্বশীলতার সাথে পরিচয় করিয়ে দিন

দায়িত্বশীলতা কী? কেন? কীভাবে? ইত্যাদি দৈনন্দিন জীবন থেকেই আপনার সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন। ছোট মানুষের সামনে দায়িত্বশীলতা ইয়া বড় সংজ্ঞা বা ভারি ভারি কিছু কথা বললে সে কিছুই বুঝবে না। তারচেয়ে তার কোন সফলতার পেছনে কীভাবে দায়িত্বশীলতার অবদান ছিলো তা তাকে বুঝিয়ে বলুন। পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছে? তাহলে তাকে জানান, সে দায়িত্বশীলতার সাথে পড়ালেখা, হোমওয়ার্ক করেছে বলেই রেজাল্টও ভালো হয়েছে। কিংবা রেজাল্ট খারাপ হলে বলুন, পড়ালেখার বিষয়ে তার যতটুকু দায়িত্বশীল হওয়ার কথা ছিলো সে ততটুকু দায়িত্বশীল ছিলো না, তার ততটুকু চেষ্টা ছিলো না। এর ফলে সে বুঝতে পারবে কোন কাজের সফলতার পেছনে দায়িত্বশীলতার গুরুত্ব কী!

নিজে দায়িত্বশীল হোন সন্তানের সাথে

সন্তানকে বললেন-কাল আমরা কেনাকাটা করতে যাবো, কিন্তু হঠাৎ ব্যস্ততায় তা হয়ে উঠেনি। কিংবা ভুলে গেছেন। এমন যদি প্রায় হয় তাহলে আপনার সন্তান আপনার মাধ্যমে একটা ভুল শিক্ষা নিবে। সে ভাববে, কোন কথা বললে তা রাখার ক্ষেত্রে বাধ্যবাধকতা নেই, ভুলেও যাওয়া যাবে। কারণ আপনার সন্তান আপনার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি শিখবে। আপনার কাজের প্রতিফলনই ঘটবে তার চরিত্র গঠনে। সেজন্য সন্তানের সাথে কোন কাজে নিজে দায়িত্বশীল হোন। কোন কথা দেয়ার আগে, নিজের সীমাবদ্ধতা ভেবে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। আর যদি কোন কারণে তাকে দেয়া কথা রাখতে না পারেন, তাহলে তার জন্য তার কাছে দুঃখ প্রকাশ করুন। এক্ষেত্রে সে শিখবে নিজের অপারগতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে হয়। এটাও কিন্তু দায়িত্বশীলতা।

সন্তানকে শুনুন ও তার সততাকে সমর্থন দিন

সন্তানের কাছে নিজেকে একজন ভালো ও বিশ্বস্ত শ্রোতা হিসেবে উপস্থাপন করুন। সে যেন তার ভালো লাগা, খারাপ লাগা, দোষ, ভুল, নিজের অপরাধ সবকিছু আপনার কাছে নিঃসংকোচে বলতে পারে। সে আপনাকে নিঃসংকোচে সবকিছু বললেই আপনি তার অনেক কিছু জানতে পারবেন ও তাকে সে অনুযায়ী ফিডব্যাক দিতে পারবেন। সন্তান আপনাকে ভালো শ্রোতা তখনই ভাববে, যখন সে তার সবকিছু আপনাকে বলে ইতিবাচক সাড়া পাবে। ধরুন, সন্তান ঘরের কোন কিছু ভেঙ্গে ফেলে আপনার কাছে এসে জানালো আর আপনি তাকে ধমক দিলেন, জিনিসটি ভাঙ্গার জন্য বকলেন। তাহলে কিন্তু সন্তান পরের বার আপনাকে কোন কিছু জানাতে আগ্রহ পাবে না। সে যে আপনার কাছে সত্য কথাটি বলেছে ও ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেছে সে জন্য অনুপ্রাণিত করুন। সত্য স্বীকার করা, নিজের ভুল স্বীকার করাও কিন্তু দায়িত্বশীলতার মধ্যেই পড়ে।

বয়স অনুযায়ী কিছু দায়িত্ব তার কাঁধে দিন

খেলনা নিয়ে খেলার পর নিজের খেলনাগুলো গুছিয়ে রাখা, পড়া শেষে বইপত্র ও পড়ার টেবিল গুছিয়ে রাখা, নিজের রুমটাকে একটু গুছিয়ে রাখা, একটু বড় হলে নিজের কাপড় নিজে ধোয়া, আলমারিতে গুছিয়ে কাপড় চোপড় রাখা, তার মতো করে খাবারের টেবিল সাজানো, মাঝে মাঝে বাসার ময়লা ডাস্টবিনে নিয়ে ফেলে আসা; তার বয়স অনুযায়ী এমন ছোট খাটো কাজগুলো দায়িত্বশীলতার সাথে তাকে করতে দিন। এই কাজগুলোর দায়িত্ব নেয়া ও সঠিকভাবে পালন করার মাধ্যমে তার ভেতরে দায়িত্বশীলতার জন্ম নিবে।

পারিবারিক সিদ্ধান্তে সন্তানের মতামত জানতে চান

সন্তানের বয়স অনুযায়ী তাকে পারিবারিক সিদ্ধান্তগুলোতে যুক্ত করুন, তার মতামত জানতে চান। ছুটির দিনে সবাই মিলে ঘুরতে যাবেন; কোথায় যেতে চান সেটা সন্তানের কাছ থেকেও জানুন। সন্তানের একটু বয়স হলে তাকে পারিবারিক সিরিয়াস বিষয়গুলোতে যুক্ত করতে পারেন। তার মতামত নেয়ার ক্ষেত্রে তাকে কিছু অপশন ঠিক করে দিন, যাতে সেরা অপশনটা বেছে নিতে সুবিধা হয়। আর চেষ্টা করুন তার মতামতকে গুরুত্ব দিতে। এতে সে নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ ভাববে ও তার ভেতরে দায়িত্বশীলতা জন্ম নিবে ধীরে ধীরে।

সন্তানকে সমাধান খুঁজে বের করতে দিন

সন্তানের ছোট খাটো সমস্যাগুলোর সমাধান তাকেই বের করতে দিন। শুরুতেই আপনার সরাসরি যুক্ত না হওয়াই ভালো। হোমওয়ার্ক কিংবা স্কুলের কোন সায়েন্স প্রজেক্ট, স্কুলে কোন সমস্যা; ইত্যাদির ক্ষেত্রে আগে তাকে ভাবতে দিন। সবার মস্তিস্কই কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন ভাবে কাজ করে। আপনি যদি তাকে তার সমস্যা নিয়ে ভাবার সুযোগ দেন, দেখবেন সে দারুণ কোন সমাধান বের করে ফেলেছে যা আপনার ভাবনায় হয়তো আসতো না। এতে দুটো উপকার হবে; প্রথমত তার সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বাড়বে; দ্বিতীয়ত দায়িত্বের সাথে একটা সমাধান বের করার পর নিজের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। আর সন্তান কোন সমাধান বের করতে না পারলে আপনিতো আছেনই।

কোন কাজ আগে, কোন কাজ পরে

কাজের গুরুত্ব অনুসারে কোন কাজ আগে করতে হবে কোন কাজ পরে এই ক্রম বুঝতে পারাও দায়িত্বশীলতার বড় একটা শিক্ষা। যাদেরকে কাজের গুরুত্বই বোঝানো যায় না, তাকে আবার গুরুত্বের ক্রম কীভাবে শেখাবো? এই প্রশ্ন ঘুরছেতো মাথায়? সে ছোট মানুষ, তাকে ছোট কাজগুলোর গুরুত্বই শেখান না। ধরুন বাসার খেলনা দিয়ে কিছুক্ষণ খেলার পরে সে বন্ধুদের সাথে মাঠে খেলতে যাবে ভাবছে। তাহলে তাকে বলুন বাইরে খেলতে যাওয়ার আগে বাসার খেলনাগুলো গুছিয়ে রাখতে। হোমওয়ার্ক শেষ করে টিভিতে তার প্রিয় অনুষ্ঠান দেখার সময় হয়েছে, আগে পড়ার টেবিল গোছাতে বলুন। টিভি দেখা শেষে খেতে যাবে? আগে অবশ্যই টিভি বন্ধ করতে হবে। এভাবেই আগের কাজ আগে করার গুরুত্ব সম্পর্কে তাকে শিক্ষা দিতে পারেন।

বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

নিয়মিত এমন কন্টেন্ট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন

* indicates required




 2,730 total views,  1 views today

What People Are Saying

Facebook Comment