মেজ সন্তানটি একটু অন্যরকম হয়। এটা কিন্তু কথার কথা না। এর পেছনে বেশ কিছু যুক্তিসঙ্গত কারণও আছে। দেখুন তো যুক্তিগুলো মিলিয়ে, হয়তো বা আপনার সাথে, বা আপনার সন্তান বা ভাইবোনের সাথে মিলেও যেতে পারে, কেন তারা অন্যরকম হয়!
১। তাদের ওপর চাপ কম থাকে
তারা অহেতুক বোঝা চাপিয়ে নিজেদের ক্লিষ্ট করে না। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, বড় সন্তানদের মধ্যে ৫৪% নিজেদের অবস্থানটিকে সবচেয়ে দায়িত্বপূর্ণ ভাবে। ছোটদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যাটি মাত্র ৩১%। এই যে বাঁধনহীনতা, এটি তাদের ভেতর একটি মুক্ত পরিবেশের জন্ম দেয়। যা নানারকম উদ্বেগ, চিন্তা এবং সংশয় থেকে মুক্ত রাখে। “কী করলে কী হবে” জাতীয় ভাবনাকে দূরে সরিয়ে রেখে তারা হয় আরো এ্যাডভেঞ্চারাস এবং গতিশীল।
২। তার শ্রদ্ধা এবং স্নেহের মর্যাদা বোঝে
সম্পর্কের মুল্যায়নে অন্যদের চেয়ে বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে তারা, বিশেষ করে মেজ সন্তানেরা। বড়দের প্রতি সম্মান এবং ছোটদের স্নেহ করার গুণাবলী থাকে তাদের মাঝে। বড় এবং ছোটদের মাঝখানে থেকে তারা জানে কার কাছ থেকে কীভাবে কাজ আদায় করতে হবে এবং নিজের কাজ কীভাবে অর্পণ করা যাবে। মনের অজান্তেই তারা নতুন নতুন ভাবনা সৃষ্টি করে এবং হয়ে ওঠে নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন।
৩। তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের পদ্ধতিটা ভিন্ন
নজর পাওয়ার জন্যে তারা অন্যরকম পদ্ধতি ব্যবহার করে। বড় সন্তানের প্রতি সবার একটা আলাদা স্নেহ থাকে। আর ছোটজন! তার সব আচরণেই একটা দুষ্টমিষ্টি স্বাদ থাকে। সবাই তাকে বেশি আদর করে, অপরাধ মওকুফ করে। মেজ সন্তানটি থেকে যায় অবহেলিত এবং আড়ালে। তাই নিজেকে প্রকাশিত করতে এবং সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সে অপ্রথাগত উপায়ে নিজের সৃজনীশক্তি খাটায়। তারা মানুষের সাথে সহজেই মিশতে পারে, এবং হাস্যরসে মাতিয়ে তুলতে পারে। ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্রে যা বেশ কাজে লাগে।
৪। তাদের মধ্যে বিলাসী মনোভাব কম থাকে
অকারণ ফ্যাশন এবং অলংকরণের পেছনে সময় ব্যয় করে না।! নতুন নতুন সাজ-পোষাক, অলংকার প্রভৃতির প্রতি মেজ সন্তানদের তেমন একটা আগ্রহ থাকে না। এর ফলে প্রচুর টাকা এবং সময় বেচে যায়। বাড়তি সময়টায় তারা নতুন কোন শখের প্রতি সময় নিবেদন করে নিজেকে আরো শাণিত করে তোলে।
৫। তারা স্বভাবগতভাবে বিপ্লবী হয়ে থাকে
কনিষ্ঠ সন্তানেরা জন্মগতভাবেই বিপ্লবী হয়ে থাকে! বৃটিশ লেখক মাইকেল গ্রোস তার একটি নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, কনিষ্ঠ সন্তানেরা অন্যদের চেয়ে তুলনামূলক কম ছয় অংকের বেতন পেয়ে থাকেন। এটা হয়তো বা নেতিবাচক মনে হতে পারে। তবে প্রকৃতপক্ষে এর পেছনে তাদের বিপ্লবী মনোভাব কাজ করে থাকে। তারা প্রথাগত চাকরিতে নিজেদের সন্তুষ্ট করতে চায় না। এর পেছনে শৈশব এবং কৈশোরে তাদের বেড়ে ওঠার পদ্ধতির বিশেষ ভূমিকা আছে। জ্ঞান হওয়ার পরেই তারা দেখে বড়জন নানা নিয়ম-কানুনের নিগড়ে তাদের বন্দী করে রেখেছে। সম্পর্কচ্যূতি না ঘটিয়ে নতুন নতুন উপায়ে এইসব নিয়ম ভেঙে নিজের অস্তিত্ব, মেধা এবং সৃষ্টিশীলতার উদ্ভাস ঘটানোর আশ্চর্য বুদ্ধিদীপ্ত সব উপায় বের করে ফেলে কনিষ্ঠ সন্তানেরা।
আরো পড়তে পারেন – ভাই-বোনের মধ্যে দ্বন্দ্ব দূর করা উপায়
ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা এবং বিজ্ঞানবাক্স
সন্তান বড়, মেজ বা ছোট যাই হোক, বিজ্ঞানবাক্স কিন্তু তার লাগবেই!
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন এই লিংকে!
867 total views, 1 views today