সেসব অভিভাবকই অভিভাবক হিসেবে উত্তম, যারা সন্তানের ভবিষ্যৎকে পরিপুষ্ট করে তোলার জন্য দিতে পারেন সঠিক জল-হাওয়া। আসুন, জেনে নিই এরকম সাতটি আচরণ সম্পর্কে, যেগুলো আপনাকে করে তুলতে পারে একজন সুঅভিভাবক।
১। সন্তানের সঙ্গে সময় কাটানো:
ব্যস্ততা থাকবেই, কিন্তু একজন ভালো অভিভাবক অবশ্যই সন্তানের স্বার্থে কিছু ব্যস্ততাকে ‘না’ বলে দিতে পারেন অনায়াসে। আপনার বাবুকে কবে কখন কী কিনে দিয়েছেন, সেসব কিন্তু সে তেমন মনে রাখবে না, যতটা মনে রাখবে আপনার সঙ্গে কাটান মূহূর্তগুলোকে। তাই, তাদের সঙ্গে একসাথে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন।
২। একসাথে খেতে বসা:
বাচ্চাকে নিয়ে একসাথে খেতে বসার দারুণ উপকারিতা আছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব পরিবারে সন্তানরা বাবা-মায়ের সঙ্গে একসাথে বসে খাবার খায়, তাদের মধ্যে হতাশা এবং আত্মহত্যা প্রবণতা কম থাকে। কারণ- এতে করে সন্তানদের সঙ্গে বাবা-মায়ের ঘনিষ্ঠতা অনেক বাড়ে।
৩। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে শেখানো:
বাচ্চাদের অন্যদের টেইক কেয়ার করতে শেখানো এবং কেউ তাদের জন্য কিছু করলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে শেখানো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি ব্যাপার। এই জিনিসটি রপ্ত করাতে পারলে পরবর্তীতে তারা হৃদয়বান আর ক্ষমাশীল হবে। বাচ্চাদের মাঝে মাঝে ছোট-খাট কাজ করতে দিয়ে,কাজ শেষে বাবা-মা নিজেরাই যদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, তবে সে এম্নিই তা শিখে যাবে।
৪। বাচ্চাদের পছন্দ-অপছন্দের মূল্যায়ন করা:
একজন ভালো অভিভাবক অবশ্যই বাচ্চার পছন্দ-অপছন্দের মূল্যায়ন করেন। ছোট-খাট ব্যাপার দিয়ে তা শুরু করা যায়; যেমন- নিজের পছন্দের জামা বা খেলনা কিনে দেয়া, সকালের নাশতায় কী খেতে চায় জিজ্ঞেস করা ইত্যাদি। এতে শিশুরা নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে শেখে, স্বাধীনতার স্বাদ পায়, বাবা-মায়ের প্রতি বিশ্বাসটাও মজবুত হয় আর তারা নিজেরাও বিশ্বাসী হয়ে ওঠে।
৫। নম্র সুরে কথা বলা:
পৃথিবীর কোন বাচ্চার সঙ্গেই চিৎকার করে কথা বলে তাদের ভালো আচরণ শেখানো যায় না। যত নরম সুরে, ধৈর্য নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলা যায়, ততোই তারা বাবা-মায়ের আরও অনুগত হয়।
৬। ব্যর্থতা মেনে নিতে শেখানো:
বড়দের মতো বাচ্চাদের মধ্যেও দুটো ক্যাটাগরি আছে। কেউ মনে করে, জিততে হলে ফেল করা যাবে না। কেউ মনে করে, ফেল করতে করতে জেতা হবে। তিনিই উত্তম অভিভাবক, যিনি শিশুকে দ্বিতীয়টি মেনে নিতে শেখান। তাই, শুধুমাত্র সন্তানের প্রকৃতিপ্রদত্ত গুণকেই কদর না করে, তার চেষ্টাটাকেও স্বীকৃতি দেয়া অবশ্যকর্তব্য; এবং ভুলের জন্য তাকে ক্ষমা করে দিয়ে তার মধ্যে ‘আবার করলে পারবে’ মানসিকতা গড়ে তোলা উত্তম।
৭। শিশুদের সামনে হতাশা প্রকাশ না করা:
বাবা-মায়ের হতাশা একেবারে সরাসরি শিশুদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। তারা নিজেরাও হতাশা এবং ক্লান্তি বোধ করে। কেউ কেউ সেই গ্লানি থেকে মুক্তি পেতে বেছে নেয় আত্মহননের পথ। তাই সন্তানের সামনে সবসময় হাসি-খুশি এবং উচ্ছ্বল থাকতে পারলে তাদের মানসিক শক্তি ঠিক থাকবে।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
807 total views, 1 views today