যার বই পড়ার অভ্যাস নেই, সে জগতের অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত। বই পড়ার আছে দারুণ সব উপকারিতা। যেমন? দেখে নিন-
১। মন এবং মস্তিষ্ক সচল রাখে:
গবেষণা করে দেখা গেছে, বই পড়লে মস্তিষ্ক উদ্দীপিত হয়, যা মস্তিষ্ককে সচল রাখে। এতে করে আলঝেইমারের ঝুঁকি কমে। শরীরের জন্য যেমন শারীরিক কসরত দরকার, তা না হলে শরীর বিকল হয়ে যায়, মস্তিষ্কের জন্যেও তেমনি ব্যায়াম দরকার। মস্তিষ্কের এই ব্যায়াম হয় বই পড়ার মাধ্যমে।
২। মানসিক চাপ কমায়:
দৈনন্দিন জরুরি কাজের চাপ, মানবিক সম্পর্কের চাপ কিংবা অন্য যে কোন চাপে আপনি যতই জর্জরিত হন না কেন, একটা গল্পের ভেতর যখন ঢুকে যাবেন, এসব কিছুই আর মনে আসবে না। সকল দুশ্চিন্তা এবং বর্তমানের ঝক্কি-ঝামেলা থেকে মুক্ত করে বই আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক জগতে।
৩। জ্ঞান আহরণ এর উৎস:
অভিজ্ঞতা অর্জনের পাশাপাশি জ্ঞান আহরণের সবচে’ বড় উৎস হচ্ছে বই। ধর্ম, বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্পকলা, সামাজিক প্রথা, সভ্যতা…কী নেই বইয়ের জগতে? আপনার মাথা তথ্যে ভরপুর হবে বই পড়তে পড়তে, মনে উঁকি দেয়া নানা প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে কেবল বই পড়ার মাধ্যমে, কিংবা উঁকি দিতে পারে নতুন নতুন প্রশ্নও। যতো প্রশ্ন, ততো উত্তর, ততো জ্ঞান।
৪। শব্দ-ভাণ্ডার সমৃদ্ধ করে:
সন্তানকে গাইড বই কিনে দিতে হবে না, শুধু বই পড়ার অভ্যাস গড়ে দিন। কারণ- বই শব্দ-ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করে। যে যত বই পড়ে, তার শব্দ-ভাণ্ডার ততো উন্নত। যার মাথায় প্রচুর শব্দ খেলা করছে, তার পক্ষে যে কোন কিছু নিয়েই কয়েক পৃষ্ঠা লিখে ফেলা সম্ভব।
৫। স্মৃতিশক্তি প্রখর করে:
একটা বই পড়ে তার ভেতরকার তথ্যগুলো বা গল্পটি আমরা মনে করার চেষ্টা করি। মজার ব্যাপার হল, প্রসঙ্গ আসলে চট করে সেসব মনেও পড়ে। এর অর্থ হল, প্রতিবার আপনি যখন মস্তিষ্কে নতুন মেমরি যোগ করছেন, কিছু পুরনো মেমরি হারালেও, আপনার মস্তিষ্কের সৃতিকোষগুলো আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে এবং কোষগুলোর মাঝে নতুন নতুন সংযোগ (সিনাপ্স) তৈরি হচ্ছে। মানে, আপনার স্মৃতিশক্তি বাড়ছে।
৬। মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা তৈরি করে:
অনেক সময়ই দেখা যায়, একটা উপন্যাস পড়তে পড়তে কাহিনীর শেষটা কী হবে তা আমরা অনুমান করার চেষ্টা করতে থাকি। একটা গোয়েন্দা বই পড়ার সময় নিজেই গোয়েন্দার আগে ক্রিমিনালকে ধরে ফেলি। এই প্রক্রিয়াটি বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আবার, যখন আমরা তথ্য বা কাহিনীটা পড়ি, বোঝার স্বার্থে সেদিকেই সমস্ত মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করি। এভাবে, বই আমাদের মনোযোগও বাড়ায়।
৭। সর্বোত্তম বিনোদন:
বই হতে পারে বিনোদনের সবচে’ ভালো মাধ্যম। এই বিষয়টি তারাই কেবল উপলব্ধি করতে পারবেন, যাদের বই পড়ার অভ্যাস আছে। একটা গল্প পড়তে পড়তে তার চরিত্রগুলোর সঙ্গে মিশে যাওয়া, তাদের সুখে হেসে ওঠা, তাদের দুঃখে কেঁদে ফেলার মতো এতো অন্যরকম অনুভূতি পৃথিবীর আর কোন কিছুতেই হয়তো নেই। যেখানে টেলিভিশনের বিনোদন নিতে গিয়ে আপনি হারাচ্ছেন আপনার স্মরণশক্তি এবং মনোযোগ, সেখানে বই পড়ে আপনি তা বৃদ্ধি করতে পারছেন। তাহলে বইয়ের চেয়ে ভালো বিনোদন আর কী হতে পারে?
অতএব, নিজে বই পড়ুন এবং অন্যকে বই পড়তে উৎসাহিত করুন।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
864 total views, 1 views today