মীনা কার্টুনের কথা মনে আছেতো? মিনার তিনটা ইচ্ছার কথা মনে আছেতো! গ্রামের সব বাচ্চারা যখন অসুস্থ হয়ে যাচ্ছিলো মীনা তখন কুপির দৈত্যের কাছে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্পর্কে সচেতন করার ইচ্ছার কথা বলেছিলো। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরে অসুস্থ হয়নি, কারণ ঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কারণে জীবাণু তাদের আক্রমণই করতে পারেনি। আমরা অসুস্থ হলে ডাক্তারের কাছে যাই, কিন্তু কেমন হয় যদি আমরা অসুস্থই না হই! একদম অসুস্থ না হওয়া হয়তো সম্ভব না। কিন্তু হ্যাঁ, স্বাস্থ্য টিপস মেনে চললে অনায়াসেই আমরা অনেক অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে পারি। গত পর্বে আমরা বেশ কিছু স্বাস্থ্য টিপস সম্পর্কে জেনেছি। এই পর্বে জেনে নিবো আরো কিছু স্বাস্থ্য টিপস।
গোসলের স্বাস্থ্যবিধি
একটা ফ্রেশ গোসল মানে শরীরে অনেকটা প্রশান্তি। শিশুর মাঝে নিয়মিত গোসলের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। গোসল করার সময় কিছু বিষয়ের দিকে খেয়াল রাখুন।
• দিনে দুইবার গোসল করতে বলুন। স্কুলে যাওয়ার আগে একবার ও স্কুল থেকে আসার পর একবার।
• গোসল করার সময় বগল, পায়ের কুঁচকি, পায়ের তলা ও পা ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
• গোসলে সাবান ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
• সাবান ব্যবহারের সময় চোখের জন্য একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
পায়ের স্বাস্থ্যবিধি
শিশুরা অনেক সময়ই খেলতে খেলতে পা মুখে নিয়ে আসে। আর স্কুলগোয়িং বাচ্চারা দীর্ঘক্ষণ মোজা ও ক্যাডস পড়ে থাকতে হয়। ফলে ঘাম হয়ে সেখানে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। সেজন্য পায়ের যত্নের দিকেও নজর দিতে হবে।
• শিশুর পায়ের আঙ্গুলের মাঝ ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
• যারা ক্যাডস পরে, ক্যাডসের সাথে মোজা পড়া নিশ্চিত করুন ও মোজা একবার ব্যবহার করেই ধুয়ে দিন। একই মোজা না ধুয়ে বার বার ব্যবহার করলে ফাঙ্গাসের সংক্রমণ হতে পারে।
• নিয়মিত শিশুর পায়ের নখ কেটে দিন।
• শিশুর জন্য নরম জুতা পছন্দ করুন ও পায়ে আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য লোশন অথবা পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করুন।
টয়লেটের স্বাস্থ্যবিধি
টয়লেট ও বাথরুম হলো বাসার সবচেয়ে বেশি জীবাণু বহনকারী স্থান। সেজন্য খেয়াল রাখবে হবে টয়লেট ব্যবহারের ফলে যেন কোন ধরণের সংক্রমণ না হয়। নিয়মিত টয়লেট পরিষ্কার করতে হবে ও সন্তানকে টয়লেট পরিষ্কারের গুরুত্ব জানাতে হবে।
• টয়লেট ব্যবহারের পর শিশুকে জীবাণু নাশক টিস্যু ব্যবহার করতে বলুন।
• টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।
• নিয়মিত টয়লেট পরিষ্কার করতে হবে।
হাঁচি ও কাশির স্বাস্থ্যবিধি
আমাদের অনেক রোগ ও জীবাণু হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে ছড়ায়। হাঁচি ও কাশির মাধ্যমে জীবাণু বাতাসে অথবা হাতের সংস্পর্শে আবার পেটে গিয়ে সংক্রমণ ঘটাতে পারে। সেজন্য হাঁচি ও কাশি দেয়ার ক্ষেত্রে কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে।
• হাঁচি ও কাশি দেয়ার ক্ষেত্রে শিশুকে মুখ ঢেকে রাখার পরামর্শ দিন।
• হাঁচি ও কাশি দেয়ার সময় হাতে সংক্রমণ এড়ানোর জন্য কাপড় ব্যবহার করতে পারেন। অথবা হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
আরও কিছু স্বাস্থ্যবিধি
• সন্তানকে সবসময় পরিষ্কার জামা পড়তে উৎসাহ। নিয়মিত জামা কাপড় ধোয়ায় উৎসাহী করুন।
• পরিষ্কার পরিছন্ন থাকার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
• খাবারের পর নিজের প্লেট নিজে ধোয়ার ব্যাপারে উৎসাহী করুন।
• তার নিজের কারণে কোন কিছু অপরিষ্কার হলে, কিংবা তার সামনে নোংরা কিছু পড়লে সে যেন তা নিজে থেকে পরিষ্কার করে নেয়, এ বিষয়ে তাকে উৎসাহী করুন।
সন্তানকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা শেখানোর কিছু টিপস
সন্তানকে চাইলেই একদিনে সব শিখিয়ে ফেলা যাবে না। চেষ্টা করতে হবে ধীরে ধীরে। কিভাবে প্রতিদিন অল্প অল্প করে বাচ্চাকে শেখাবেন জেনে নিন।
• শিশুকে ভালো অভ্যাস ও খারাপ অভ্যাসের ব্যবধান বোঝান। খাওয়ার আগে হাত ধোয়ার মাধ্যমে কীভাবে তার খাদ্যাভাস স্বাস্থ্যকর হয়ে গেছে সেটা তাকে বলুন। আর হাত না ধুলে কী ক্ষতি হতে পারে তাও বলুন।
• শিশুর মাঝে নিজে নিজে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে উঠলে তাকে ধীরে ধীরে দাঁতের যত্ন, চোখের যত্ন ও অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্পর্কে জানান।
• কোন ধরণের জায়গা থেকে জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া আমাদের আক্রমণ করতে পারে সেসব সম্পর্কে একটু ধারণা দিন।
• কিছু কিছু অভ্যাস শিশুর সাথে বাবা-মায়ের করার মাধ্যমে গড়ে তুলুন। যেমন-ব্রাশ করা, খাবার আগে হাত ধোয়া ইত্যাদি
স্বাস্থ্য টিপস মানার মাধ্যমে অনেকাংশেই শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করা যায়।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
893 total views, 1 views today