সুন্দর কোনকিছু গড়তে সময় লাগে। শিশুদের ক্ষেত্রে তো আরো একটু বেশিই সময় লাগবে। তাকে সময় দিন এবং শিখিয়ে দিন।
চলুন, আমরা আমাদের ছোটবেলায় ফিরে যাই। সেই শুরুর দিকের কথা যখন আমরা পড়াশোনা শুরু করেছিলাম। আধো আধো করে দুই একটা বাক্য দিয়ে শুরু করে আস্তে আস্তে লেখাও শুরু করেছিলাম। সেই সময়ে হাতের লেখা খারাপের জন্যে বকাঝকা শোনেন নি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। যাদের হাতের লেখা এখন অনেক সুন্দর, তাদের লেখাও ছোটবেলায় সুন্দর ছিল না। চর্চা আর সঠিক দিক নির্দেশনাই পারে শিশুর হাতের লেখা সুন্দর করতে।
চার পর্বের এই ধারাবাহিকের প্রথম পর্বে আমরা জানব কিছু মৌলিক বিষয়। সেগুলো দিয়েই শুরু করতে হবে।
১। নিজ থেকে বুঝতে দিন
খাতা-পেন্সিল নিয়ে তার সামনে বসুন। শুরুতেই তার হাতে পেন্সিল ধরিয়ে দেবেন না। শিশুর সামনে আপনি নিজে কোন একটি অক্ষর লিখুন। এরপর তার সামনে পেন্সিল দিন। দেখুন সে নিজ থেকে কীভাবে পেন্সিল ধরে, কোন হাতে ধরে। এসব ব্যাপারে জোরাজুরি করবেন না।
২। পর্যাপ্ত সময় দিন
যে কোন প্রকার তাড়াহুড়োয় হিতে বিপরীত হবে। পর্যাপ্ত সময় দিয়ে তাকে লেখার কাজের সাথে পরিচিত হতে সময় দিন। দেখুন সে কত সময় নিচ্ছে এটি বোঝার জন্যে। অভিভাবক হিসেবে শিশুকে দিন সর্বোচ্চ মনোযোগ। পড়ুন
৩। ছোট বড় শব্দের পার্থক্য বুঝান
সাধারনত আমাদের দুই ধরনের বর্ণ লিখতে হয়। বাংলা এবং ইংরেজি। বাংলাতে তেমন ছোট-বড় শব্দের পার্থক্য না থাকলেও ইংরেজিতে আছে। ইংরেজির ছোট হাতের এবং বড় হাতের অক্ষর গুলোর পার্থক্য বুঝতে তাকে সময় দিন। এবং লাইন টেনে শব্দ গুলো আলাদা করে লিখতে সাহায্য করুন।
৪। লাইনের মধ্যে লিখতে শেখান
মোট তিনটি লাইন এঁকে ছোট হাতের বর্ণের জন্যে নিচের দুই লাইন এবং বড় হাতের বর্ণের জন্যে পুরো তিন লাইন ব্যবহার করতে বলুন। এতে করে সে আলাদা আলাদা বর্ণের জন্য পরিমাপটা শিখবে।
শিশুকে ফ্রি রাইটিং লিখতে উৎসাহ দিন- https://bigganbaksho.com/free-writing-for-children/
৫। লাইন স্পেসিং দেখান
একটি একটি করে বর্ণ লেখার পর দুই বর্ণের মাঝে জায়গা রাখতে বলুন। এতে করে যখন সে পুর্ণাঙ্গ বাক্য লিখতে যাবে তখন প্রতি শব্দের পরে স্পেস দেয়া শিখবে। সে যদি বাঁ-হাতি হয়, তাহলে একটি পপসিকল স্টিক ব্যবহার করুন।
৬। সমজাতীয় বর্ণের ক্ষেত্রে “থাম্বসআপ” ব্যবহার করুন
ইংরেজি b এবং d লিখতে গেলে শিশুরা দ্বিধায় পড়ে যায়। তাই এই ক্ষেত্রে আপনার দুই হাত ব্যবহার করুন। b লেখার সময় বাম হাতের থাম্বসআপ দেখান এবার d লেখার সময় ডান হাতের থাম্বসআপ দেখান। এতে করে শিশুরা বর্ণ নিয়ে কোন দ্বিধায় পড়বে না।
৭। লেখা চালিয়ে যান
বাচ্চাকে নিয়ে প্রতিদিন কিছুনা কিছু লেখার চেষ্টা করুন। এতে করে তার ভেতর লেখার অভ্যাস গড়ে উঠবে। যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরী। পরিচিত শব্দ, যেগুলো প্রতিদিনই সে ব্যবহার করে বা আপনারা তার সাথে ব্যবহার করেন–ওসব শব্দ নিয়মিত লেখার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে শিশুর মানসিক কোনো চাপ আসবে না। কারণ- সে যা দেখছে শুনছে সেগুলো নিয়েই সে লিখছে।
একটি বিষয় সব সময় মনে রাখতে হবে যে, বাচ্চাকে সময় দিতে হবে। অনেক সময় নিয়ে সে একবার শিখে ফেললেই কাজ হয়ে গেলো। আর যদি তাকে বার বার তাড়া দেয়া হয় তাহলে সে লেখার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে ।সেটা তার ভবিষ্যতের জন্যে খুবই ক্ষতিকর হবে।
দ্বিতীয় পর্ব পড়তে- সুন্দর হোক শিশুর হাতের লেখা: লেখা হবে আনন্দে (২য় পর্ব)
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,215 total views, 1 views today