একটি শিশুকে হাসি-খুশি এবং সহজে যে কোন পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার মতো করে বড় করে তুলবার জন্য অনেক নিয়ম-কানুনই হয়তো আছে, কিন্তু সেটা ঠিকভাবে বোঝার জন্য অল্প কিছু বৈজ্ঞানিক উপায়ও আছে। দেখে নিন এরকম ১০টি গবেষনালব্ধ পরামর্শ, যেগুলো আপনাকে সু-অভিভাবক হওয়ার চেষ্টায় সাহায্য করবে।
১। শিশুদের উচ্চতা নিয়ে চিন্তিত না হওয়া:
তারা কতটুকু লম্বা হয়েছে এটা নিয়ে এত বেশি চিন্তা না করাই ভালো। বয়স অনুযায়ী তাদের গ্রোথ ঠিক আছে কিনা, সেই দিকে নজর রেখে তাকে পুষ্টিকর খাদ্য দেয়া যেতে পারে, কিন্তু তাদের বুঝতে দেয়া উচিত, তারা যেমন আছে, তেমনটাই ঠিক।
২। লাজুক শিশুকে সমর্থন করা:
কিছুটা লাজুক হওয়া এক জিনিস, কিন্তু অনেক শিশু আছে নতুন কোন পরিস্থিতি ফেইস করতে গেলে অনেক বেশি লাজুক হয়ে যায় এবং পিছিয়ে পড়ে। এটা আসলে বহু শিশুর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তাই এই লাজুকতা থেকে তাকে বের করে আনার জন্য বেশি জোর না করে তাকে তার মতো থাকতে দেয়াই ভালো। এই একসেপ্টেন্স শিশুর জন্য অনেক, অনেক বড় ব্যাপার।
৩। কঠিন সময়কে সহজ করে তোলা:
বড়রা যেমন বেশিরভাগ সময় ভবিষ্যত নিয়ে চিন্তা করে, শিশুরা (বিশেষ করে ২-৫ বছর বয়সী) তেমন নয়। তারা কেবল বর্তমানটাকেই বোঝে। তাই সময়গুলোকে তার কাছে সহজ করে দিতে পারলেই সে ভালো থাকবে। যেমন- ৪ বছরের একটি বাচ্চাকে সরাসরি ‘’স্কুলে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে’’ না বলে কিছুটা পরিষ্কার করে সহজ ভঙ্গিতে বলতে পারলে খুব ভালো হয়। বলা যেতে পারে, ‘’আমাদের স্কুলের জন্য বেরুনো দরকার। ইউনিফর্ম পরার সময় হয়ে গেছে।‘’
৪। অনুভূতি প্রকাশে সাহায্য করা:
অনেক শিশুই দেখা যায় ভয়, হতাশা, আনন্দ, দুঃখে নিজেদের অনুভূতিগুলো প্রকাশ করতে পারে না। সেক্ষেত্রে অভিভাবক কিছুটা সাহায্য করতে পারে শিশুর মনের অবস্থা বুঝে নিয়ে। যেমন- ‘’বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে? খেলতে যেতে না পেরে খুব মন খারাপ?’’ বা, ‘’খেলনাটা নষ্ট হয়ে গেছে? নতুন চাই?’’ এভাবে পরিবেশ বুঝে তাকে সাহায্য করা যেতে পারে।
৫। মনোযোগ দেয়া:
বাবা-মা’র কাছে পূর্ণ মনোযোগই দাবী করে শিশুরা। শিশু যখন বুঝতে পারে অভিভাবক তার প্রতি মনোযোগী নন, তার মস্তিষ্কে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তাই শিশুর সঙ্গে সময় কাটানোর সময় অন্য কিছুতে এংগেজ না থাকাই ভালো।
৬। ভদ্রতাসূচক শব্দ বলা:
শিশুরা অনুকরনপ্রিয় হয়। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় ‘সরি’, ‘থ্যাঙ্কস’ জাতীয় শব্দগুলো বলার অভ্যাস থাকলে ভালো। বাসে, রাস্তায়, শপিং মলে, কর্মক্ষেত্রে, পরিবারে শিশু যত বেশি ভালো আচরন পাবে, ততই তা নিজেও শিখবে।
৭। নরম সুরে কথা বলাঃ
শিশুদের সঙ্গে চিৎকার করে কথা বলাটা তাদের পছন্দ নয়। এতে তাদের আচরন রুক্ষ্ণ হয়ে পড়ে। এটা এমনকি টিন-এজ শিশুদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। তাই তাদের সঙ্গে কথা বলার সময় যত নরম সুরে বলা যায়, ততোই ভালো।
৮। খুব বেশি শাসন না করা:
গবেষনায় দেখা যায়, ২-৫ বছর বয়েসী শিশুদের কর্মকান্ডে অতিমাত্রায় শাসন আরোপ করা বা কাঠিন্য বজায় রাখা বাবা-মায়েরা ভালো সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যর্থ হন।
৯। বাবাদের আরও ঘনিষ্ঠ হওয়া:
একমাত্র স্তন্যদান ছাড়া শিশুর কাজের মধ্যে বাবার কাজ, মায়ের কাজ বলে আলাদা কিছু নেই। এসব চিরা-চরিত ভাবনা পরিহার করাই ভালো বলে গবেষকরা মনে করেন। ডায়াপার বদলানো, গোসল করানো, মাঝে মাঝে খাওয়ানো, এগুলো তাদের ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়ায়।
১০। মজা করা:
শিশুদের সঙ্গে মজা করতে পারলে তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে, তারা সৃষ্টিশীল চিন্তায় পারদর্শী হয়, আর বাবা-মায়ের সঙ্গে সম্পর্কটাও হয় দারুণ বন্ধুত্বপুর্ণ!
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
778 total views, 1 views today