Show Categories

যেভাবে আপনার সন্তানকে ফরমালিন মুক্ত ফলমূল খেতে দিবেন!

[emaillocker]

প্রিয় সন্তানের পুষ্টির কথা বিবেচনা করে আবরার সাহেব প্রায় দিনই বিভিন্ন তাজা ফলমূল কেনেন। ছোট্ট অরু আবার আঙ্গুর খেতে খুব পছন্দ করে। আর তাইতো সেদিন অফিস থেকে ফেরার পথে সন্তানের জন্য তা কিনে বাসায় ফিরলেন। অরু তো  আঙ্গুর পেয়ে মহাখুশি। সে রাতে বাবার সাথে খেলতে খেলতে মজা করে তা খেল। হঠাৎ করে সে রাতেই অরুর বমি এবং পেট ব্যথা শুরু হল। ক্রমাগত বমি করে বাচ্চাটা দুর্বল হয়ে পড়লো। ওর মা-বাবা ভয় পেয়ে রাতদুপুরেই বাচ্চাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটলেন। ডাক্তার ওকে ভালভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানালেন বিষাক্ত কিছু খাবার কারণে এই অবস্থা হয়েছে!

তারপর অরুর আম্মুর কাছে যখন শুনলেন যে, রাতে আঙ্গুর খাওয়ার পর থেকেই ও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তখন ধারণা করে বললেন, হয়তো ফলে রাসায়নিক কিছু মেশানো ছিল। তারপর ডাক্তার অরুর মা-বাবাকে ফলফলাদি কেনার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে বললেন। আরও বললেন, বাচ্চাকে সব সময়ই যেন ফরমালিন (Formalin) মুক্ত ফলমূল খেতে দেয়া হয়।

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ৫টি দেশীয় ফলঃ যা আপনার সন্তানের পুষ্টির চাহিদা মেটাবে!

আমরা সবাই ভিটামিনে ভরপুর তাজা ফল খেতে কম বেশী পছন্দ করি। আর আমাদের দেশে বছর জুড়েই বিভিন্ন পুষ্টিকর ফলে বাজার সয়লাব থাকে। তবে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীরা ফলমূল অনেক দিন ধরে সংরক্ষণ করার জন্য ফরমালিন ব্যবহার করে থাকে। এই ফরমালিন (Formalin) মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে থাকে। আর এসব ফরমালিন যুক্ত ফল আমরা দেদারসে খেয়ে চলেছি। এবং এর ফলে নানা রোগ ব্যাধি বাসা বাঁধছে আমাদের শরীরে।

বাজার থেকে সতর্কতার সাথে ফলমূল বেছে কিনুন। সেক্ষেত্রে  ফরমালিন (Formalin) মুক্ত ফল চেনার ক্ষেত্রে কয়েকটি উপায় অবলম্বন করতে পারেন। যেমনঃ
১। ফলের ঘ্রাণ শুঁকে/অনুভব করে

গাছপাকা ফলের সুঘ্রাণই আলাদা আর সেক্ষেত্রে ফরমালিন (Formalin) যুক্ত ফলে রাসায়নিকের ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে। সেক্ষেত্রে ফলে যদি প্রাকৃতিক ঘ্রাণ না থাকে এবং ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যায়, তাহলে বুঝতে হবে যে সেই ফল ফরমালিন যুক্ত।

২। ফলের স্বাদের ভিন্নতা লক্ষ্য করে

প্রাকৃতিক ভাবে গাছপাকা ফলের স্বাদ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মিষ্টি হয়। কিন্তু কৃত্রিমভাবে পাকানো ফলের স্বাদ কিছু অংশ টক আর কিছু অংশ মিষ্টি হয়। রাসায়নিক দেয়া ফলে স্বাভাবিক স্বাদ বা ঘ্রাণ থাকে না। বরং এক প্রকার বিশ্রী ঝাঁজালো গন্ধ আর ফলটা রসালো টাইপের হয় না।

৩। ফলের রঙের তারতম্য লক্ষ্য করে

যেসব ফল গাছেই পাকে সেগুলোর রং কিছুটা সবুজ কিংবা হলুদ হয়। অনেকসময় ফরমালিন (Formalin) যুক্ত ফলের রং সম্পূর্ণই হলুদ হয়ে যায়। যেমন, লিচুর কথাই ধরা যাক। লিচুর কালার কাঁচা অবস্থায় সবুজ আর পাকলে হয় লাল। কিন্তু রাসায়নিক ভাবে পাকানো লিচুর কালার হয় গাড় ম্যাজেন্টা।

৪। ফলের দীর্ঘ স্থায়িত্বতা লক্ষ্য করে

প্রাকৃতিক ভাবে গাছপাকা ফল বেশিদিন ভাল থাকে না। সংরক্ষণের জন্য এমনি রাখলে পচন শুরু হয় এবং ফ্রিজে রাখলে অল্পদিন টেকে। কিন্তু ফরমালিন (Formalin) দেয়া ফল ফ্রিজে না রাখলেও অনেকদিন টেকে এবং সহজে পচন ধরে না।

৫। ফল ভালভাবে অবলোকন করে

কোন ফল দেখতে যদি একটু অন্যরকম লাগে তবে তা বুঝেশুনে কিনুন। যেমন ধরুন, আম কেনার ক্ষেত্রে যদি দেখেন যে, দাগহীন মসৃণ চকচকে, তাহলে তা কিনবেন না। সম্পূর্ণ দাগবিহীন আমকে কাঁচা অবস্থায় রাসায়নিক দিয়ে পাকানো হয়।

৬। পতঙ্গের বিচরণ দেখে

কৃত্রিমভাবে রাসায়নিক দিয়ে যেসব ফলমূল পাকানো হয় তার আশেপাশে বিভিন্ন পতঙ্গ বিচরণ করে না। আর এসব ফলমূলে মশা, মাছি, মৌমাছি ও অন্যান্য পোকাও তেমন একটা বসে না। সেক্ষেত্রে একটু লক্ষ্য করে দেখলেই এ বিষয়টা চোখে পড়বে।

অনেকসময় বাজার থেকে দেখেশুনে ফলমূল কিনে আনলেও তা ফরমালিনযুক্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ফলের ফরমালিন (Formalin) দূর করতে কিছু কার্যকর পদ্ধতি দেখে নিতে পারেনঃ

১। বাজার থেকে ফল কিনে এনে তা পানির কল ছেড়ে তার নিচে দশ থেকে পনের মিনিট রেখে দিন। এভাবে ফল ধুলে ফরমালিন (Formalin) অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।

২। গরম লবণমিশ্রিত পানিতে ফল বিশ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। পড়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৩। ফলমূল ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে পনের থেকে বিশ মিনিট ভিজিয়ে রাখুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে, পরিষ্কার ন্যাকড়া বা টিস্যু দিয়ে মুছে ফেলুন।

৪। লবণ এবং লেবুর রস মিশ্রিত পানিতে পনের মিনিট ফল ভিজিয়ে রাখুন। পনের মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৫। চাল ধোয়া পানিতে ফলমূল এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। পরবর্তীতে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে ফরমালিন অনেকটাই দূর হবে।

রোগ প্রতিরোধে পেয়ারার কার্যকর ভূমিকা!

বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

এভাবে সহজেই ফলমূলের ফরমালিন (Formalin) দূর করে তা বাচ্চাকে খেতে দিতে পারেন। ফরমালিনমুক্ত পুষ্টিকর ফল খেয়ে আপনার সন্তান সুস্থ সবল ভাবে বেড়ে উঠুক!

তথ্যসূত্রঃ

১। http://www.carethyself.com/toxic-or-formalin-free-fruits/

[/emaillocker]

 1,393 total views,  2 views today

What People Are Saying

Facebook Comment