Show Categories

বিজ্ঞানের মজা, মজার বিজ্ঞান: ‘আলোর ঝলক’ হতে পারে শিশুর সেরা উপহার

আজ বলব অমল, নীহা আর অর্নির গল্প। খেলতে খেলতেই কী করে তারা বুঝতে পেরেছিল বিজ্ঞানের মজা। একই সাথে আনন্দ এবং জ্ঞান (knowledge) অর্জনের চমৎকার উপকরণ হতে বিজ্ঞানবাক্সের ‘আলোর ঝলক’।

 ঘরে বসেই পেরিস্কোপ তৈরি করল রাকিব আর চমকে দিল বন্ধুকে

মতিঝিল মডেল স্কুলের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র রাকিব। ক্লাসে তার সবচে’ প্রিয় বন্ধু মিহির। সামনেই ছিল মিহিরে জন্মদিন। অনেক দিন থেকেই রাকিব ভাবছিল এমন ব্যতিক্রমধর্মী কোন উপহার মিহিরকে দেয়া যায় কিনা, যেটা দেখে মিহির চমকে যাবে আবার মজাও পাবে। মিহিরের আবার বিজ্ঞানের নানা বিষয় জানার প্রতি খুবই আগ্রহ। রাকিব তাই মিহিরকে এমন কিছুই দেয়ার কথা ভাবছিল যেটা মিহিরের মনের উৎকৃষ্ট খোরাক হতে পারে। ভাবতে ভাবতে একটা দারুণ বুদ্ধি পেয়ে গেল রাকিব। সে নিজেই ঘরে বসে বানিয়ে ফেলল দারুণ সেই উপহার।

জন্মদিনের দিন উপহারটা পেয়ে অবাক হয়ে গেল মিহির। চোখ গোল গোল হয়ে গেল তার। একটা লম্বা কাগজের বাক্স, তার দুই প্রান্তে দুইটা করে চারকোণা কাঁচ লাগানো। রাকিব মিহিরকে টেবিলের সঙ্গে বাক্সটা ঠেকিয়ে নিচে বসে বাক্সের অপর প্রান্তে চোখ লাগিয়ে দেখতে বলল। আর মিহিরও কথামতো কাজ করে তাজ্জব বনে গেল। আরে! টেবিলের ওপর রাখা রাকিবের মার্বেল তো সে টেবিলে ওপর অংশে না তাকিয়েই দেখতে পাচ্ছে!

রাকিব তাকে বুঝিয়ে বলল যে, এটা কোন জাদুর বাক্স নয়। এটা হল পেরিস্কোপ। সাবমেরিন পানির নিচে থাকলেও পানির ওপরের স্তরের সবকিছু সাবমেরিনের ভেতর থেকে দেখা যায় এই প্রক্রিয়া কাজে লাগিয়ে। মিহির আরেকবার পেরিস্কোপে চোখ লাগিয়ে ‘হুররে’ করে চেঁচিয়ে ওঠে।

এবার আসল কথা বলা যাক, মিহিরের জন্মদিনের ক’দিন আগেই রাকিব বাবার কাছ থেকে উপহার পেয়েছিল ‘আলোর ঝলক’। আলোর ঝলকের এক্সপেরিমেন্টগুলো করতে করতেই মিহিরকে পেরিস্কোপ উপহার দেয়ার কথা মনে এসেছিল তার। আর, উপহারটা সে বানাতে পেরেছিল ঘরে বসেই। কারণ- বিজ্ঞানবাক্সেই দেয়া ছিল পেরিস্কোপ তৈরির সকল উপকরণ এবং নির্দেশিকা।

যেভাবে পেরিস্কোপ তৈরি করতে হয়

বিজ্ঞানবাক্সের- মজার পেরিস্কোপ 

নিজেই ক্যালাইডোস্কোপ দিয়ে নকশা বানাল নীহা  

নীহার আম্মু কাপড়ে হাতের কাজ করেন। সেইসব কাজের মধ্যে বাটিক, ব্লক, অ্যাপ্লিক সবই আছে। নানারকম নকশা তুলে সেইসব কাপড় তিনি দোকানে দোকানে সেল করেন। এভাবেই নীহার আম্মু অর্থ উপার্জন করেন। কিন্তু বিপত্তি হল নীহার ছোট ভাই তুতুলকে নিয়ে।কাপড়ের নকশাগুলো ওকে খুব আকর্ষণ করে। সে মায়ের সঙ্গে বায়না করে নিজেই কাপড়ে নকশা করবে বলে। ছোট্ট তুতুলকে সামলাতে খুব বেগ পেতে হচ্ছিল নীহার আম্মুকে। একদিন স্কুল থেকে ফিরে এসে নীহা ওর আম্মুকে একটা দারুণ বুদ্ধি দিল। যদি তুতুলের হাতে এরকম একটা যন্ত্র থাকে, যা দিয়ে তুতুল নিজেই নানারকম নকশা বানাতে পারবে তাহলেই তার বায়না করা বন্ধ হয়ে যাবে। আর এটা সম্ভব ক্যালাইডোস্কোপের মাধ্যমে। অন্যরকম বিজ্ঞান বাক্সের ‘আলোর ঝলক’-এ ক্যালাইডোস্কোপ তৈরির পদ্ধতি আর উপকরণ সবই দেয়া আছে।

তারপর নীহার আম্মু ওকে ‘আলোর ঝলক’ কিনে দেন, আর নীহা  তুতুলকে  সত্যি সত্যিই একটা ক্যালাইডোস্কোপ তৈরি করে দেয়। তুতুল ক্যালাইডোস্কোপে চোখ লাগিয়ে নানা রকম নকশা দেখে প্রথমে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যায়, তারপর খুশিতে হাততালি দিয়ে নেচে ওঠে।

এভাবেই তৈরি হবে ক্যালাইডোস্কোপ

অর্নির পার্শ্ব-পরিবর্তন ম্যাজিকে কুপোকাত শিপ্রা

“আমার লাল গাড়ি ডানে-বামে যায়…আমার লাল গাড়ি ডানে-বামে যায়…”

একদিন অর্নির কণ্ঠে গুণগুণ করে এমন একটা গান শুনে বাড়ির সবাই মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে। আর কিছু নেই, কেবল একটাই লাইন গাইছে অর্নি। অর্নির ছোট বোন এই গানের অর্থ জানতে চাইলে সে তাকে একটা ম্যাজিক দেখাবে বলে কথা দেয়।

দুপুরে খাওয়ার পর অর্নি ছোটবোন শিপ্রাকে একটা কাঁচের গ্লাস পানি দিয়ে পূর্ণ করে নিয়ে আসতে বলল। তারপর পড়ার ঘরের টেবিলের ড্রয়ার থেকে একটা লাল রঙের গাড়ি আঁকা কার্ড এনে গ্লাসের পেছনে দাঁড়াল, আর শিপ্রাকে বলল সামনে থাকতে। শিপ্রা স্পষ্ট দেখল যে, কার্ডটায় আঁকা লাল রঙের গাড়িটা ডান দিকে মুখ করে ছিল। কিন্তু যেইনা অর্নি সেটাকে পেছন দিকে নিয়ে যেতে থাকল, সেটাকে দেখা গেল বাম দিকে মুখ করে দাঁড়ানো। এইভাবে যতবার সে কার্ডটা সামনে-পেছনে আনল; ততোবার গাড়িটাকে একবার ডান দিকে, আরেকবার বাম দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেল।

আলোর একটা ধর্মকে কাজে লাগিয়ে অর্নি তার ছোট বোন শিপ্রাকে এই ম্যাজিকটি দেখিয়েছিল। ম্যাজিক দেখে শিপ্রা তো বিস্ময়ে অভিভূত! আনন্দে উদ্বেলিত!! বিজ্ঞান যে এত মজার হতে পারে, জানতই না সে। এরপর নিজের ভালো লাগা থেকেই বাবাকে দিয়ে অনেকগুলো বিজ্ঞানভিত্তিক বই কিনিয়েছিল  শিপ্রা। জানার যে অপার আগ্রহ তার!

জানতে চান, অর্নি এই ম্যাজিকের বুদ্ধি কোথা থেকে পেয়েছিল? অর্নির কাছে ছিল বিজ্ঞানবাক্সের ‘আলোর ঝলক’ আর সেখানেই এমন একটি পরীক্ষণ ছিল, যেটা করে বোনকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল অর্নি।

এভাবেই শিশুদের ভুবন জ্ঞান আর আনন্দের সম্মিলনে রঙিন হয়ে উঠতে পারে। বিজ্ঞান নিয়ে খেলতে খেলতে জানার আগ্রহ জাগতে পারে তাদের মনে। আমরা চাই, বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর শিক্ষা জীবন এমন আনন্দময় হয়ে উঠুক।

আলোর ঝলক সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন

বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

 747 total views,  1 views today

What People Are Saying

Facebook Comment