শিশুরা শক্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় না। সময়ের সাথে সাথে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে থাকে। সেজন্য শিশুরা প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশুদের রোগ প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধের দিকে গুরুত্ব দেয়া উচিত। শুধুমাত্র হাত ধোয়ার মাধ্যমেই শিশুদের অনেক রোগের প্রতিরোধ করা সম্ভব। হাত ধোয়ার অভ্যাস একই সাথে প্রাপ্তবয়স্কদের রোগ প্রতিরোধেও ভূমিকা রাখে। আজকের বিজ্ঞানবাক্সের ব্লগে থাকছে হাত ধোয়ার গুরুত্ব, সুফল, কিভাবে হাত ধুতে হবে? কখন ধুতে হবে?
হাত ধোয়ার গুরুত্ব –
আমাদের শরীরের অনেক রোগ ও সংক্রমণ হাতের মাধ্যমে ছড়ায়। সারাদিনে বিভিন্নভাবে হাত নোংরা হয়, হাতের মাধ্যমে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ জন্মাতে সাহায্য করে। টয়লেট ব্যবহারের পর হাত না ধোয়াই পরিচিত অনেক রোগের কারণ। মানুষের ও পশুর বিষ্ঠায় নোরোভাইরাস, ই-কোলাই, সালমোনেলা নামক ভাইরাস থাকে। এই ভাইরাসগুলোই ডায়রিয়া হওয়ার অন্যতম কারণ। তাছাড়া হাতের মাধ্যমে ছড়ানো ভাইরাসগুলই শ্বাসনালীর সংক্রমণের মতো মারাত্মক রোগের কারণ। অপরিষ্কার ও দূষিত হাত নিজের শরীরে জীবাণু ছড়িয়ে দেয়ার সাথে সাথে তার সংস্পর্শে আসা অন্য সবার মাঝেও জীবাণু ছড়িয়ে দেয়। এজন্য শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্ত বয়স্কদেরও হাত ধোয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে জানাতে হবে ও হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে।
আরো জানুন- বর্ষা মৌসুমের শিশুর রোগ-বালাই, কারণ, লক্ষণ, প্রতিকার।
কখন হাত ধুতে হবে ঃ-
* খাবারের আগে ও পরে।
* টয়লেট ব্যবহারের পরে।
* খাবার তৈরী করার আগে ও পরে।
* খাবার পরিবেশনের আগে ও পরে।
* অসুস্থ কারো সেবা করার ও সংস্পর্শে আসার আগে ও পরে।
* পোষাপ্রাণীর খাবার ধরার পরে ও পোষাপ্রাণী স্পর্শ করার পরে।
* বাবুর ডায়াপার পরিষ্কারের পরে।
* নাক ঝাড়া ও কাশি দেয়ার পরে।
* ঘুমাতে যাওয়ার আগে ও পরে।
* শিশুদের খেলাধুলার পরে।
* নোংরা কোন কিছু স্পর্শ করার পরে।
কিভাবে হাত ধোয়া উচিত ঃ-
* প্রথমে পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে হাত ভিজিয়ে নিতে হবে।
* সাবান অথবা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালোভাবে হাত ঘষতে হবে।
* নখের নিচের অংশ, আঙ্গুলের মাঝের অংশ, তালু, করতল ও কব্জি ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
* পানি, হ্যান্ডওয়াশ, সাবান না থাকলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু হ্যান্ড স্যানিটাইজার হাত থেকে শক্তিশালী জীবাণু ও রাসায়নিক সরাতে পারে না।
* সাবান লাগিয়ে অন্তত ৩০ সেকেন্ড ভালোভাবে ডলে হাত পরিষ্কার করতে হবে।
* চলমান পরিষ্কার পানিতে হাত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
* পরিষ্কার শুকনো তোয়ালে দিয়ে হাত ভালোভাবে মুছে ফেলতে হবে।
আরো পড়তে পারেন- শিশুর ৭ টি সাধারণ দুর্ঘটনার প্রাথমিক চিকিৎসা।
নিয়মিত হাত ধোয়ার সুফল ঃ-
* জীবাণু যুক্ত হাত দিয়ে কোন কিছু স্পর্শ করলে হাত থেকে জীবাণু বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পরিবারের অন্যদেরকে সংক্রমিত করে।
* রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলেও শুধু হাত ধোয়ার মাধ্যমে পেটের সংক্রমণ কমায় প্রায় ৫০ শতাংশ।
* ডায়রিয়ার সংক্রমণ কমায় প্রায় ৩১ শতাংশ।
* সকল ধরনের ভাইরাস ও জীবাণু সংক্রান্ত রোগ অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
আপনার সন্তান থাকুক সুস্থ এবং সবল।
আরো পড়তে পারেন- অতিরিক্ত ডায়াপার নির্ভরতার সাইড এফেক্ট
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,583 total views, 2 views today