শিশুদের শরীর শুরুতেই সবকিছুর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে না। গরমের সময় গরম থেকে রক্ষা করতে একটু আরাম দিতে ঠান্ডায় রাখার পর দেখা যায় শিশুর ঠান্ডা লেগে গেছে। আবার শীতের সময় একটু উষ্ণ রাখতে গেলে হয়ে যেতে পারে ওভারহিটেড। এমন স্পর্শকাতর শরীরের জন্য শিশুর যত্ন নেয়ার ক্ষেত্রে দরকার একটু সাবধানতা। নতুবা, শীতে বা গরমে শিশুদের স্বাস্থ্যগত বেশ কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। আপনার জন্য শীতে শিশুকে উষ্ণ রাখার কিছু টিপস নিয়ে হাজির হয়েছে বিজ্ঞানবাক্স।
শীতের রাতের উষ্ণতা টিপস
- শীতকালে শিশুর রুমের তাপমাত্রা ১৬ ডিগ্রি থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন।
- শীতকালে শিশুকে উষ্ণ রাখার জন্য স্লিপস্যুট ব্যবহার করতে পারেন। নিচে মোজা সম্বলিত স্লিপস্যুট হলে ভালো। এতে শিশুর পা ঢাকা যায় ফলে পা উষ্ণ থাকে।
- অতিরিক্ত শুষ্কতা ও চুলকানি এড়াতে ভালো মানের ময়েশ্চেরাইজার ব্যবহার করতে পারেন।
- বাইরে অনেক বেশি ঠান্ডা থাকলে রুমের জানালা বন্ধ করে দিন। তবে খেয়াল রাখুন, শিশুর রুমে যেন ভেন্টিলেটর থাকে।
- অতিরিক্ত ঠান্ডা এড়াতে রুমে রুম হিটার ব্যবহার করতে পারেন।
- শুধু মাত্র জামায় শিশুর শীত নিয়ন্ত্রণ হবে না মনে হলে হালকা ও সূতি ছোট কম্বল দিতে পারেন গায়ের উপর। তবে খেয়াল রাখবেন কম্বল যেন বেশি ভারী না হয়।
সাবধানতা
- কোনভাবেই কাপড় দিয়ে শিশুর মাথা, মুখ ঢাকবেন না। শিশুর মাথা ঢাকা থাকলে একটু বেশি পরিমাণে তাপ উৎপাদিত হয়। যা শিশুর জন্য ক্ষতিকারক। তাছাড়া রাতে শিশুর মাথা ও মুখমন্ডল ঢাকা থাকলে যেকোন সময় শিশুর নিশ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। কখনোই ভারী কম্বল শিশুর গায়ের উপর দিবেন না। আর রাতে যদি দেখেন যে শিশু ঘেমে যাচ্ছে, জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে তাহলে শিশুর গায়ের ওপর থেকে কম্বল বা এমন কিছু থাকলে তা সরিয়ে দিতে পারেন।
শীতের সময় বাইরে যাওয়ার সুরক্ষা টিপস
- শীতের সময় বাইরে যেতে সবসময় ফুলহাতা টি-শার্ট বা সোয়েটার পরান। শীতের তীব্রতা বিবেচনায় হাত মোজা, পা মোজা ও কান ঢাকা যায় এমন টুপি পরাতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন জামা যেন আঁটসাট না হয়। সূতি ও নরম জামা পরানোর চেষ্টা করুন।
- তীব্র শীতে বাইরে গেলে শিশুর যত্ন নিতে ক্যাঙ্গারু কেয়ার পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। ক্যাঙ্গারু কেয়ার শিশুকে বহন করার একটি পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে বেবি ক্যারিয়ার দিয়ে মায়ের বা বাবার বুকের সাথে শিশুকে জড়িয়ে রাখা হয়। সাধারণত প্রি-ম্যাচিউর বেবির ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হলেও তীব্র শীতের সময় বাইরে গেলে আপনার নবজাতক শিশুকেও এভাবে বহন করা উত্তম।
সাবধানতা
- শিশুর শরীর পরিপূর্ণ শুষ্ক রাখার দিকে মনোযোগ দিন। শিশুর জামাও যেন একদম শুকনো হয়। কোনভাবেই ভেজা কাপড় এমনকি হালকা ভেজা কাপড় কিংবা ভেজা শরীরে শিশুকে জামা পরাবেন না। বাইরে কোন কারণে শিশুর শরীর বা জামা ভিজে গেলে তাড়াতাড়ি শুকনো জামা পরিয়ে নিন।
- শিশুকে নিয়ে বেশি সময় বাইরে থাকার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে নিতে পারেন।
শীতের সময় শিশুর শরীরকে সঠিকভাবে আর্দ্র রাখার টিপস
শীতে শিশুকে আর্দ্র রাখার জন্য ময়েশ্চেরাইজার তো ব্যবহার করবেনই। সাথে আরো কিছু টিপস কাজে লাগাতে পারেন।
- শীতের সময় শিশুকে প্রতিদিন গোসল করানোর দরকার নেই। একটু বিরতি দিয়ে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করান।
- গোসল করাতে অল্প সময় নিন। ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য পানির স্পর্শে বেশিক্ষণ রাখবেন না। গোসল শেষে দ্রুতই নরম তোয়ালে দিয়ে ভালোভাবে গা মুছে ফেলুন। শক্ত বা খসখসে তোয়ালে ব্যবহার না করাই উত্তম।
- শীতকালে শিশুর ত্বকে সাবান ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। করলেও কম ক্ষারীয় ও কম সুগন্ধ যুক্ত সাবান ব্যবহার করুন।
শীতে আপনার শিশুর যত্ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই টিপসগুলো কাজে লাগাতে পারেন। এই টিপসগুলো আপনার শিশুকে শীতের সাধারণ সমস্যা থেকে সুরক্ষিত রাখবে।
স্বাস্থ্যের সঠিক সুরক্ষা নিয়ে তো ভাবেন! সন্তানের মেধার সুষ্ঠু বিকাশ নিয়ে ভেবেছেন কি? অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্সের কথা জানেন কি? শিশুদের সঠিক মেধা বিকাশে কাজ করে যাচ্ছে অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,433 total views, 1 views today