সন্তান স্কুলে আরও ভালো করুক, আরও ক্রিয়েটিভ হোক, আরও বুঝতে শিখুক-এমনটাই চান তো আপনি? তাহলে দয়া করে তার ডায়েটের দিকেও একটু নজর দিন। কিছু নির্দিষ্ট খাবার আছে, যেগুলো শিশুদের ব্রেইনের কর্মক্ষমতা বাড়ায়, স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মনোযোগ বাড়াতেও সাহায্য করে। গবেষকরা বলেন, শরীরের সবচে’ খাই খাই করা অংশ – মানুষের ব্রেইন। সেটাকে চার্জড আপ রাখতে হলে খেতে হবে প্রয়োজনীয় খাবার ( foods for brain )। উদাহরণ হিসেবে তারা বলেন,
“ মস্তিষ্কের ক্ষতি চান? বেশি বেশি জাংকফুড খান”
আজকে এমন কিছু খাবার সম্পর্কে বলব, যেগুলো বাচ্চাদের ব্রেইন ডেভেলপমেন্টে সহায়তা করে। এই খাবারগুলোকে বলা হয় ‘সুপারফুড’ বা ব্রেইনফুড’।
১. মাছ (Fish)
মাছ প্রোটিনের ( foods for brain ) অন্যতম উৎস। তাই বাচ্চাদের খাদ্য তালিকায় মাছ তো রাখতে হবেই। তবে সেই মাছ যদি হয় সামুদ্রিক মাছ, তাহলে তো কথাই নেই। সামুদ্রিক মাছ যেমন- টুনা, রূপচাঁদা, লইট্টা, লাক্ষা এসব মাছে প্রচুর পরিমাণে আয়োডিন এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এ্যাসিড রয়েছে, যা বাচ্চাদের মস্তিষ্ককে শানিত করে।অনেক বাচ্চা মাছ খেতে চায় না। তাদেরকে বড়া, স্যুপ ইত্যাদি নতুন নতুন খাবারের মাধ্যমে মাছে অভ্যস্ত করার চেষ্টা করতে হবে।
২. ডিম (Egg)
ডিম ( foods for brain ) প্রোটিনের অনেক বড় উৎস এবং সহজলভ্যও। ডাক্তাররা প্রোটিন হিসেবে ডিম খাওয়ানোর পরামর্শই দিয়ে থাকেন বেশি। ডিমের কুসুমে আছে ‘চোলিন’, যা স্মৃতিশক্তি বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। সেদ্ধ ডিমের পাশাপাশি বিভিন্ন নাশতার সাথেই ডিম রাখা খুব সহজ।
৩. পিনাট বাটার (Peanut butter)
বাদাম এবং বাদাম থেকে তৈরি মাখন (both are necessary foods for brain ), দুটোতেই আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। আছে উপকারী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা মস্তিষ্কের নার্ভাস মেমব্রেন্সকে রক্ষা করে। এছাড়াও এতে আছে থায়ামিন, যা এনার্জির জন্য গ্লুকোস ব্যবহারে মস্তিষ্ককে উদ্দীপিত রাখে।
৪. দানা বা শস্যজাতীয় খাবার (Whole grains)
মস্তিষ্কের জন্য সব সময় গ্লুকোজ প্রয়োজন হয়। দানা বা শস্য জাতীয় খাবারের ফাইবার শরীরে গ্লুকোজের সঞ্চালন নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও, শস্যের ভিটামিন বি নার্ভাস সিস্টেমকে ভালো রাখে।
৫. ওটস (Oats)
ওটসও দানা বা শস্যজাতীয় খাবারের মধ্যেই পড়ে। বাজারে প্রক্রিয়াজাত ওটস পাওয়া যায়। এটা একাই দারুণ পুষ্টিকর। শরীর ব্রেইনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান পাবে, আবার স্থূলতার হাত থেকেও রক্ষা পাবে। ওটসে আছে একই সাথে ভিটামিন ই, বি, পটাশিয়াম এবং জিংক। প্রতিদিন সকালে বাচ্চাদের ওটস খেতে দিলে সারাদিনই তারা এনার্জেটিক থাকে। কারণ- ওটস ব্রেইন ফাংশনকে পুরোপুরি ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
৬. বেরিজাতীয় ফল (Berries)
বেরিজাতীয় ফলের মধ্যে আছে ব্ল্যাকবেরি (কালোজাম নামে পরিচিত), স্ট্রবেরি, চেরি, ব্লুবেরি। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, বিশেষ করে ভিটামিন সি; যা স্মরণশক্তি ভালো করে। কিন্তু বেরিজাতীয় ফলের বিচি খেতেও উৎসাহিত করেন পুষ্টিবিদেরা। বেরিফলের বিচিতে থাকে ওমেগা-৩ ফ্যাট।
৭. শীম ( Beans, foods for brain )
শীম প্রোটিন, ফাইবার এবং ভিটামিনের উৎকৃষ্ট উৎস। শিমেও প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এ্যাসিড রয়েছে। মস্তিষ্কের বাম গোলার্ধ উদ্দীপিত করে এবং চিন্তাশক্তি বাড়ায়। শক্তি তো অবশ্যই যোগায়। শীম আছে কয়েক প্রজাতির। যা পাওয়া যায়, সবই খাওয়াতে হবে।
৮. রঙীন সব্জি ( colorful vegetables, foods for brain )
টমেটো, মিষ্টি আলু, কুমড়ো, গাজর, স্পিনাচ, ব্রকলি, লাল পাতাকপি—এসব গাঢ় রঙের সব্জিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট; যা ব্রেইন সেলগুলোকে আরও শক্তিশালী করে তোলে।
৯. দুধ এবং দই (Milk and yogurt)
ডেইরি খাবারগুলো প্রোটিন, শর্করা এবং ভিটামিন-বি’র ভালো উৎস। দুধ যে আদর্শ খাবার, সেটা কে না জানে! দইয়েরও আছে দারুণ উপকারিতা। ডেইরি খাবার ব্রেইন টিস্যুর বৃদ্ধি, নিউরোট্রান্সমিটার এবং এনজাইমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
১০. গরুর লাল মাংস/মুরগীর মাংস (Red beef/meat)
আয়রন মনোযোগ বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। গরুর লাল মাংস আয়রনের অনেক বড় উৎস। আরও আছে জিংক। এগুলো স্মরণশক্তির উন্নতি ঘটায়। মস্তিষ্কের জন্য উপকারী খাবারগুলো ( foods for brain ) বাচ্চাদের বেশি বেশি করে খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন পুষ্টিবিদরা।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
3,000 total views, 2 views today