জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করতে করতে পৃথিবী আজ ক্লান্ত, সৌর শক্তি হতে পারে জ্বালানী সমস্যার টেকসই সমাধান। তার জন্য আমাদের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সৌর প্রকল্পের আকার ও সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, এবং তা এমন জায়গায় স্থাপন করতে হবে যেন অনেক সূর্যালোক পায়। কোথায় সোলার প্যানেল স্থাপন করবে বলে ভাবছো, তোমার বাড়ির খোলা ছাদে নাকি অন্য কোথাও? বিশ্বে এমন অনেক জায়গা আছে বিশেষ করে মরুভূমি অঞ্চল যেখানে প্রচুর সূর্যালোক থাকে সেসব স্থানে যদি সোলার প্যানেল স্থাপন করা যায় তাহলে কি হবে ? পুরো পৃথিবী কি এখান থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি পাবে? নাকি কোন সমস্যার সম্মুখীন হবে? তোমার কি মনে হয়?
তুমি জেনে অবাক হবে যে, সারা বিশ্বের মানুষ ১ বছরে যে পরিমাণ সৌর শক্তি পায় পৃথিবীর সমস্ত মরুভূমি মাত্র ৬ ঘন্টায় তার থেকে বেশি পরিমাণ সৌর শক্তি পায়। এই সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে যদি সাহারা মরুভূমির মাত্র ১.২ শতাংশ সোলার প্যানেল বসানো যায় তাহলে পুরো বিশ্বের শক্তির চাহিদা মেটানো যাবে।
সাধারণত সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করা হয় পরিবেশের পরিবর্তন রোধে, কিন্তু এটা যদি সাহারা মরুভূমিতে করা হয় তাহলে তার নিজস্ব কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যাবে। যদি সাহারা মরুভূমিতে সোলার প্যানেল স্থাপন করা যায় তাহলে ঐ অঞ্চলের বৃষ্টিপাত দ্বিগুণ হবে, গাছপালা প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এটা শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, তবে বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে এটা সম্ভব।
আরো পড়তে পারো- আগ্নেয়গিরিতে কেন ফেলা হয় না পৃথিবীর সকল আবর্জনা।
তুমি কি জানো, সাহারা মরুভূমির বালির রঙ অস্বাভাবিকভাবে হালকা, ফলে এটি আলোকে বেশি পরিমাণে প্রতিফলিত করে দ্রুত বাতাসকে গরম করে দেয়। যদি কালো রঙের সোলার প্যানেল সাহারা মরুভূমিতে স্থাপন করা যায় তাহলে আরো বেশি পরিমাণে আলোক রশ্মি শোষিত হবে এবং তা আরো বেশি পরিমাণে ভূ-তাপমাত্রা বৃদ্ধি করবে। কি হবে যদি এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়? এই তাপমাত্রা বায়ুমণ্ডলের গরম বাতাস শীতল করে, আদ্রতা বৃদ্ধি এবং ঘনীভূত করে যা বৃষ্টিপাত সৃষ্টিতে সাহায্য করে। পানি সরবারাহ পেলে ঐ অঞ্চলে উদ্ভিদের অঙ্কুরোদগম বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ এই সোলার প্যানেল শুধু যে নবায়নযোগ্য শক্তির সমাধান করবে তা কিন্তু নয়, এটা মরুভূমি অঞ্চলকে সবুজায়িতও করবে। আর এটাই বর্তমান পৃথিবীর জন্য দরকার।
কথা বলে লাইট জ্বালাতে চাও, বিজ্ঞানবাক্স হাতে নাও।
বৃষ্টিপাত বৃদ্ধির ফলে ঐ অঞ্চলের কৃষিতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব। খাদ্য ঘাটতি মিটাবে গবাদিপশুর ও মরুভূমি অঞ্চলে বসবাসরত মানুষের। টেকসই সমাধান আসতে পারে পানি, বিদ্যুৎ ও কৃষিতে।
এত সুবিধার মধ্যে কিছু অসুবিধাও আছে। এ প্রকল্পের ফলে অল্প পরিমাণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয় নিয়ে গবেষণা দলের প্রধান যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ইয়ান লি. বলেছেন- গ্রীন হাইজ প্রতিক্রিয়ার কারণে সৃষ্ট তাপের তুলনায় এই তাপমাত্রা খুবই কম।
সুতরাং মরুভূমি অঞ্চলে যদি এ ধরণের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয় তাহলে তা ঐ অঞ্চলের পরিবেশ ও মানুষের জীবনমানে পরিবর্তন আসবে বলে আশাকরা যায়।
সূত্রঃ What If
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,787 total views, 1 views today