প্রতিটি মানুষের আত্মনির্ভরশীল হওয়া জরুরী। আত্মনির্ভরশীলতা বলতে শুধু পড়ালেখা কিংবা অর্থবিত্তে না। আত্মনির্ভরশীল’তা মানে নিজের দায়িত্ব নেয়া। ছোট থেকে বড় নিজের প্রতিদিনের কাজগুলো নিজেকেই করতে শেখা। পড়ালেখায় সেরা হওয়ার পাশাপাশি আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য ছোট থেকেই আপনার সন্তানের মধ্যে নিজে নিজে কাজ করতে পারার স্কিলগুলো গড়ে তোলা জরুরী। আর এই স্কিলগুলো হুট করে একদিনে গড়ে উঠবে না। সন্তানকে এই স্কিলগুলো শেখাতে হবে বয়সের সাথে সাথে অল্প অল্প করে। আজকের ব্লগে আমরা জানবো কোন বয়সে সন্তানের কোন কোন কাজগুলো শেখা উচিত।
২-৩ বছর; সাহায্যসহ টুকটাক কাজ করতে জানার বয়স
এই বয়সে সাহায্যসহ নিজের টুকটাক কাজ সন্তানের করতে পারা উচিত।
- নিজের খেলনা নিয়েকে গুছিয়ে রাখতে শেখা
- আপনার হালকা সাহায্য নিয়ে নিজের কাপড় নিজেই পরতে পারা।
- নিজের জামা নিজেই খুলতে পারা।
- নিজের হাতে খেতে পারা।
- নিজেই নিজেই দাঁত ব্রাশ করতে শেখা।
৪-৫ বছর; গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ তথ্য মনে রাখা ও টুকটাক নিজের কাজ শেখার বয়স।
- নিজের পুরো নাম, বাসার ঠিকানা ও ফোন নাম্বার মনে রাখতে পারা।
- আপনার সাথে টুকটাক ঘর পরিষ্কারের কাজে সাহায্য করতে পারা।
- টাকা চেনা। টাকার সাধারণ ব্যবহার ও মূল্য বুঝতে শেখা।
- কোন সাহায্য ছাড়া ব্রাশ করতে জানা, মুখ পরিষ্কার করতে জানা, নিজের চুল নিজে আচড়ানো শেখা।
- নিজের ভালো জামা ও ময়লা জামা আলাদা করতে জানা। এই সময়ে নিজের জামা নিজে ধুঁতে না পারলেও আপনাকে যেন সে জামা কাপড় ধোয়ার কাজে সাহায্য করতে পারে।
- নিজের জামা নিজে পছন্দ করে পরতে পারা। স্কুলে যেতে কোনটা পরবে, বিকেলে খেলতে গেলে কোনটা পরবে এই সাধারণ জ্ঞানও যেন এই সময়ে থাকে।
৬-৭ বছর; টুকটাক রান্না বান্নার কাজ শিখতে পারার বয়স।
- রান্নার কাটাকুটির কাজ করতে পারা।
- টুকটাক কিছু খাবার বানানো শিখতে পারা।
- বাসার পাশের দোকান থেকে টুকটাক মুদিপণ্য কেনাকাটা করতে পারা।
- নিজে নিজেই টুকটাক ঘর পরিষ্কারের কাজ করতে পারা।
- সাহায্য ছাড়াই নিজের বিছানা গোঁছানো শেখা।
- নিজের পড়ার টেবিল নিজে নিজে গুছিয়ে রাখা।
- নিজে নিজেই সম্পূর্ণভাবে গোসল করতে পারা ও নিজেই নিজের কাপড় ধুতে পারা।
৮-৯ বছর; দায়িত্বশীলতার সাথে পরিচিত হওয়ার বয়স।
- নিজের কাপড় নিজেই ভাঁজ করে রাখতে পারা। নিজের কাপড় নিজে আয়রন করার স্কিলের সাথে পরিচিত করতে পারেন এই সময়ে।
- নিজ দায়িত্বে নিজের সকল খেলনার ও ব্যক্তিগত জিনিসের যত্ন নিতে শেখা।
- ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা ও সচেতন থাকতে শেখা।
- নিজেই নিজেই রেসিপি সহ সহজ কিছু রান্নার আইটেম তৈরি করতে পারা।
- পরিবেশের প্রতি যত্নশীল হতে শেখা।
১০-১৩ বছর; স্বাধীন সত্ত্বার সাথে পরিচয়
- বাসায় একা থাকতে পারার স্কিল এই সময়ে অর্জন করে ফেলা উচিত।
- নিজের কেনাকাটা নিজে যেন করতে পারে।
- বাসায় ওয়াশিং মেশিন, ইস্ত্রি ও ঘরের অন্যান্য যন্ত্রপাতির ব্যবহার জানা।
- ছোট ভাই-বোন থাকলে তার যত্ন নিতে পারা, তাকে দেখভাল করতে পারা জানা উচিত এই বয়সে।
- নিজ দায়িত্বে স্কুলের সময়ে প্রস্তুত হয়ে নেওয়া। নিজের স্কুল, কোচিং কিংবা অন্যান্য ক্ষেত্রে রুটিন মাফিক কাজ করতে পারার স্কিল গড়ে ওঠা।
- এই সময়ে তাকে পারিবারিক ছোট খাটো কোন প্রোগ্রামের ম্যানেজারের দায়িত্বটির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন।
১৪-১৮ বছর; আত্মনির্ভরশীল হওয়ার বয়স।
১৪-১৮ বছর বয়সে ধীরে ধীরে আপনার সন্তানের আত্মনির্ভশীলতাকে আরো বাড়িয়ে নিতে হবে। এই সময়ে নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে পারার দিকে নজর দিতে পারেন। একই সাথে নিজের যেকোন কাজ নিজে নিজে করতে পারা ও প্রতিটি কাজের গুরুত্ব বুঝতে শেখার দিকেও মনোযোগ দেয়া উচিত। এ সময়ে তার চারপাশের পরিবেশের প্রতি তার দায়িত্বের ব্যাপারেও তাকে আপনি সচেতন করতে পারেন। টিনএজ সন্তানের অত্যাবশ্যকীয় লাইফ স্কিল সম্পর্কে জানতে আমাদের এই ব্লগটিও পড়ে নিতে পারেন।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,724 total views, 1 views today