ঋতুচক্রে এখন চলছে হেমন্ত। হেমন্ত থেকেই প্রকৃতি হিম হয়ে হিমকন্যা শীতকে আমন্ত্রণের আয়োজন শুরু করে দেয়। হেমন্ত আর শীত দুটো ঋতুই আরামদায়ক আর সুন্দর। কিন্তু শীতকাল আসলেই নবজাতকের সুস্থতা নিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তা বেড়ে যায়। শীতকালে শিশুদের অনেক সমস্যা দেখা দেয়। শীতকালে শিশুর যত্নে কিছু নিয়ম মেনে চললেই অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বাদ দিয়ে বাবা-মা শীতকে উপভোগ করতে পারবেন।
নিজের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে হবে
সদ্যজাত শিশু মানেইতো আদর, যত্ন। সবাই একটু কোলে নিয়ে নাকটা টিপে দিতে চায়। আর মা-বাবা’তো শিশুকে আদরের মধ্যেই রাখেন। কিন্তু অবশ্যই একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, অপরিষ্কার হাতে শিশুকে ধরলে শিশুর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে। সেজন্য শিশুকে ধরার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।
বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না
মায়ের দুধ নবজাতকের জন্য কতটা উপকারী তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মায়ের বুকের দুধ নবজাতকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার সাথে সাথে শিশুকে শীতকালে ঠান্ডাজনিত রোগ থেকেও রক্ষা করে। বুকের দুধ শিশুকে উষ্ণ রাখে ও সংক্রমণ এড়াতে সাহায্য করে। এই সময়ে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করা যাবে না।
শিশুর রুম যথাসম্ভব উষ্ণ রাখতে হবে
শীতকালে শিশুর রুম উষ্ণ রাখা যদিও চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু শিশুর সুরক্ষার জন্য শিশুর রুম অবশ্যই উষ্ণ রাখতে হবে। ঘরে যেন ঠান্ডা বাতাস না ঢুকে তা নিশ্চিত করা জরুরী। রাতের বেলায় জানালা ও দরজা বন্ধ রাখতে হবে। তবে শিশুর রুমে হালকা বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখা দরকার।
সূর্যের আলোয় রয়েছে সাতটি রং। এই রহস্য উদ-ঘাটন করতে আপনার সন্তানকে আলোর ঝলক উপহার দিন।
টিকাদানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে
কোনভাবেই শিশুর নিয়মিত টিকাদান ব্যাহত করা যাবে না। শীতকালে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখার জন্য সঠিক সময়ে টিকাদান নিশ্চিত করতে হবে। নবজাতকের টিকদানের তারিখ নিয়মিত চেক করতে হবে, প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে। এবং সঠিক সময়ে শিশুকে টিকা দিতে হবে ।
শিশুকে আরামদায়ক ও উষ্ণ পোশাক পরাতে হবে
শিশুকে ভারী পোশাক পরানো পরিহার করতে হবে। ভারী ও আটসাট পোশাক পরালে শিশু অস্বস্তিতে ভুগতে পারে। শীতকালে শিশুর জন্য একই সাথে হালকা ও উষ্ণ কাপড় পছন্দ করা উচিত। শিশুকে একাধিক কাপড় না পড়িয়ে উষ্ণ দেখে একটা কাপড় পড়ানোই তার জন্য আরামদায়ক। কান ও মাথা একসাথে ঢাকা যায় এমন টুপি পরানো যেতে পারে।
ভারী কম্বল ব্যবহার করা যাবে না
অনেকেই মনে করে থাকেন রাতে শিশুকে ভারী ও মোটা কম্বল পরানো আরামদায়ক। কিন্তু এটা মোটেও শিশুর জন্য নিরাপদ না। ঘুমানোর সময় রাতে অসতর্কতা বসত মোটা কম্বল শিশুর মুখে চলে আসলে তার শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যাহত হয়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিশুর রুম উষ্ণ রাখলে ও তাকে উষ্ণ আরামদায়ক পোশাক পড়ালে রাতে হালকা কম্বলই যথেষ্ট।
সবজীতেও রয়েছে বিদ্যুৎ, তা ব্যবহার করে জ্বালানো যায় আলো। এই রহস্য পাবেন তড়িৎ তান্ডব বিজ্ঞানবাক্সে।
শিশুর ত্বকে আর্দ্রতা বজায় রাখতে হবে
শীতকালে প্রাপ্ত বয়স্কদের ত্বকও শুষ্ক হয়ে যায়। আর নবজাতকের ত্বক অনেক স্পর্শকাতর হওয়ায় ত্বকের আর্দ্রতা দ্রুত হারিয়ে যেতে পারে। শীতকালে শিশুর ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য ভালো মানের তেল ও লোশন ব্যবহার করা উচিত। নাকে হালকা তেল লাগানো যেতে পারে, তাহলে শিশুর নাকে আর্দ্রতা বজায় থাকবে ও শ্বাস-প্রশ্বাস বাধাপ্রাপ্ত হবে না।
অতিরিক্ত প্রসাধনী পরিহার করা উচিত
শীতকালে শিশুর যত্নে অতিরিক্ত প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। তেল অথবা লোশন ব্যবহার করা যাবে কিন্তু অতিরিক্ত সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না। অতিরিক্ত সাবান ও শ্যাম্পু ব্যবহারে শিশুর ত্বক অধিক শুষ্ক হয়ে যায়। শিশুকে নিয়মিত পরিষ্কার পানি দিয়ে গোসল করানো যাবে, কিন্তু সপ্তাহে একবার সাবান ব্যবহার করা উচিত।
আরো পড়ুন- বর্ষাকালে শিশুর রোগ-বালাই ও করনীয়।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
তথ্যসূত্র- Momjunction–parenting.firstcry
2,150 total views, 1 views today