শিশুর মুখে কথা ফুটাতে প্রত্যেক বাবা মাকেই ঝামেলা পোহাতে হয়। কিন্তু যেদিন প্রথম শিশুর মুখ থেকে পাপ্পা কিংবা মাম্মা শব্দ বের হয় ঠিক তখনকার মুহূর্ত অনুভব করতে পারে শুধু বাবা মা।গবেষণায় দেখা গেছে যে সকল শিশুরা ছোট বেলায় বেশী কথা বলে ও বই বান্ধব পরিবেশে বড় হয় অন্যদের তুলনায় তাদের শব্দভাণ্ডার ও ব্যাকরণ বেশী সমৃদ্ধ হয়ে থাকে। আপনার শিশুর ভাষা উন্নয়নে নিম্নে কিছু সহজ উপায় দেয়া হল
১। কথন, কথন, কথন
আপনার শিশুর সাথে যতক্ষণ সময় কাটান চেষ্টা করুন তার সাথে কথা বলতে। যেমন খেতে বসলে খাবার নিয়ে গল্প করুন। খেলতে গেলে কথা বলতে বলতে খেলুন। এই ধরনের যোগাযোগে শিশু আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনে। এতে করে শিশুর কানে শব্দ গুলো দ্রুত পৌছায়। তখন শিশু আপনার সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করবে।
২। পঠন, পঠন, পঠন
আপনার শিশুর পাশে বসে বই পড়ুন জোরে জোরে। আপনি যে বই পড়ছেন সে বইটি আপনার শিশুকে পাশে রেখে শব্দ করে পড়ুন। আপনি কি পড়ছেন শিশু না বুঝলেও সে কিন্তু ঠিকই আপনার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে। এতে করে শব্দ গুলো শিশুর কানে পৌঁছায়। তখন শিশুর মধ্যে একটা ভাবনার জগত তৈরি হয়। একটা বয়সে এসে শিশুর বই পড়ার অভ্যেস গড়ার সাথে সাথে শিশুর ভাষা উন্নয়নে কাজ করে।
৩। একসাথে গান শুনুন
আপনার শিশুর সাথে একসঙ্গে গান শুনুন। শিশুরা গান পছন্দ করে, ছন্দ পছন্দ করে। এতে করে শিশু তার চারপাশের দুনিয়া ও ভাষার ছন্দ সম্পর্কে শিখতে পারে।
আরও পড়তে পারেন- শিশু কেন ভয় পায়? ভয় দূর করতে বাবা-মায়ের করণীয় কি?…
৪। গল্প বলুন
আপনার শিশুকে গল্প বলুন। হতে পারে চাঁদের বুড়ির গল্প কিংবা রূপকথার গল্প। তবে গল্পটা যেন তার সাথে মানানসই হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এমন কোন গল্প বলবেন না যেটা শিশুর অপছন্দ হয় বা শিশুর মনে ভীতি সৃষ্টি করে। এছাড়াও কোথাও বেড়াতে গেলে বা হাঁটতে বের হলে সেটা নিয়ে গল্প করুন। এতে করে শিশুর ভাবনার জগত সৃষ্টিশীল হয়ে উঠবে।
৫। শিশুর পছন্দের দিকে মনোযোগ দিন
আপনার শিশু যদি নির্দিষ্ট কোন কিছুতে আগ্রহ দেখায় তাহলে আপনিও তাকে সেদিকে উৎসাহী করে তুলুন। শিশু যদি নির্দিষ্ট কোন ছবি বা বইয়ের দিকে আগ্রহ দেখায় তাহলে আপনিও তা নিয়ে আলোচনা করুন। এই ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করুন। তার উত্তর জানুন। শিশু যখন খেলাধুলা করে তখন ভিডিও রেকর্ড করুন। পরে সেই রেকর্ড তার সাথে বসে দেখুন।
৬। শিশুর সমালোচনা থেকে বিরত থাকুন
শিশুর কথা বলাতে অনেক ভুল থাকতে পারে। তাই তার ভুলের জন্য তাকে সমালোচনা না করে তাকে সঠিক টা জানিয়ে দিন এবং তার চেষ্টার জন্য প্রশংসা করুন।
৭। পরিমানমত টেলিভিশন ও কম্পিউটার ব্যবহার
গবেষণায় দেখা গেছে ২ বছরের নিচে শিশুর ক্ষেত্রে টেলিভিশন দেখতে দেয়া বিপদজনক। কিন্তু ২ বছরের উপরে শিশুর ক্ষেত্রে ২ ঘণ্টা টেলিভিশন দেখতে দেয়া যায়। সেক্ষেত্রে শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু প্রোগ্রাম আছে যেটা থেকে শিশু শিখতে পারে অনেক কিছু। কম্পিউটার গেমস শিশুর জন্য অনেক ইন্টারএকটিভ কিন্তু এটা অনেক সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে।
৮। শিশুর কানের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন
কান খুব স্পর্শকাতর জায়গা। শিশুদের ক্ষেত্রে কানে অনেক ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে। এতে করে শিশু কানে শুনতে পারে না এবং তার মস্তিষ্কে শব্দ যেতে পারে না। তাই শিশু ভাষাগত সমস্যার মধ্যে পরে। এক্ষেত্রে আপনার শিশুকে নিয়মিত ডাক্তার দেখান।
৯। শিশুকে বেড়াতে নিয়ে যান
আপনার শিশুকে চিডিয়াখানা, একুরিয়াম বা যাদুঘরে নিয়ে যান। তারপর তাকে বিভিন্ন প্রানির সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। তাদের নাম বলুন ও তাকে বলতে বলুন। একুরিয়াম বা যাদুঘরে নিয়ে তাকে নতুন নতুন ইতিহাসের সাথে পরিচয় করিয়ে দিন। এতে করে শিশুর নতুন জগত তৈরি হবে।
আরও দেখতে পারেন- আপনার সন্তানকে বেশি করে গান শুনতে দিন। কারণ…
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
2,761 total views, 1 views today