মেডিকেল সায়েন্সে শুধুমাত্র দাঁতের জন্য আলাদা করে পড়াশোনা করতে হয়, গবেষণা করতে হয়। “দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম বুঝতে হয়” এই কথাতো আমরা অহরহই শুনি। তার মানে দাঁত যে গুরুত্বপূর্ণ এতে কোন সন্দেহ থাকার কথা না। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের যত্নতো নিতেই হয়। আর দাঁতের যত্নের জন্য দাঁত ব্রাশ করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা বুঝা যায় বাজারে টুথপেস্ট আর ব্রাশের বিশাল চাহিদা দেখলে। সেখান থেকে আপনি দাঁতের যত্নের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস নিলেন সাথে আপনার সন্তানের জন্যও নিলেন। কিন্তু সমস্যাটা বাঁধলো অন্য জায়গায়! পেস্ট আর ব্রাশ কিনলে কী হবে! আপনার সন্তানতো কোন ভাবেই দাঁত ব্রাশ করতে চায় না। এই চিন্তায় আপনার দাঁত ব্রাশ করাও বন্ধের জোগাড়। চিন্তিত হবেন না, শিশুর দাঁতের যত্ন নিতে বিজ্ঞানবাক্স কিছু সমাধান নিয়েই এসেছে। সহজ কিছু ট্রিকস ফলো করুন আর শিশুর সা্থে দাঁত ব্রাশ করুন মহানন্দে।
শিশুর পছন্দ মতো ব্রাশ ও পেস্ট কিনুন
২-৪ বছরের মধ্যে শিশুকে দাঁত ব্রাশে অভ্যস্ত করে তোলা উচিত। শুরুতে শিশুর জন্য ব্রাশ ও পেস্ট ব্যবহার না করে টুথ পাউডার ব্যবহার করতে পারেন। এরপর ধীরে ধীরে ব্রাশ ব্যবহারে তাকে উৎসাহ দিন। দাঁত ব্রাশের জন্য পেস্ট আর ব্রাশ কেনা দরকার হলে শিশুকে সাথে নিয়েই তার পছন্দ মতো তার জন্য পেস্ট ও ব্রাশ কিনুন। বাজারে অনেক মজার মজার ডিজাইনের ব্রাশ পাওয়া যায়। পরীর ডিজাইন, পুতুলের ডিজাইন, তাদের প্রিয় কার্টুন চরিত্রের ডিজাইন আর পেস্টও পাওয়া যায় বিভিন্ন ফ্লেভারের। শিশুর পছন্দ মতো ব্রাশ ও পেস্ট কিনুন। এতে শিশু দাঁত ব্রাশ করার জন্য বেশ আগ্রহ পাবে।
ব্রাশ করার জন্য পুরস্কার দিন
শিশুরা পুরস্কার বা উপহার পেতে পছন্দ করে। তাকে ছোট ছোট কিছু লক্ষ্য ঠিক করে দিন। যেমন- একমাসে সব কটা দিন সকালে ও রাতে দু-বার করে ব্রাশ করলে তাকে মাস শেষে তার পছন্দের একটা খেলনা কিনে দিবেন। একটা সুন্দর ক্যালেন্ডার কিনে সেটাতে ওর ব্রাশ করার দিনগুলো মার্কিং করার জন্য সুন্দর সুন্দর স্টিকার কিনে দিতে পারেন। এতে তার আগ্রহ দ্বিগুন বড়ে যাবে।
শিশুর জন্য উদাহরণ হোন
শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। কেউ তাদের সামনে কোন কিছু করলে তা সেটা অনুকরণ করার চেষ্টা করে। এই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে পারেন। প্রতিদিন শিশুর সাথে একসাথে ব্রাশ করুন। দেখবেন সে নিজেও ব্রাশ করার সময়টার জন্য অপেক্ষা করবে। এই অভ্যাস গড়ে তুললে দেখবেন কখনো কখনো আপনি ভুলে গেলে বা ব্যস্ত থাকলে শিশু নিজে আপনাকে ব্রাশ করার কথা মনে করিয়ে দিবে। তাছাড়া শিশুর সাথে একসাথে ব্রাশ করলে আপনার সাথে সাথে সে ব্রাশ করার নিয়ম শিখবে। কিভাবে উপরের দাঁত ব্রাশ করা লাগবে, কীভাবে নিচের দাঁত, কীভাবে জিহ্বা পরিষ্কার করা লাগবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
মজার কিছু খেলা খেলতে পারেন
প্রতিদিন ব্রাশ করো, ব্রাশ করো বলাটা বেশ বিরক্তিকর। আর এভাবে সন্তানকে প্রতিদিন বললে সে নিজেও বিরক্ত হবে। (অবাক হচ্ছেন কেনো? ছোট মানুষ বলে কী তার বিরক্তি থাকতে পারে না?)। এজন্য মজার মজার কিছু খেলা খেলতে পারেন। যেমন-ব্রাশ করা নিয়ে প্রতিযোগিতা হতে পারে আপনার মাঝে আর সন্তানের মাঝে। কে কতক্ষণ একটানা ব্রাশ করতে পারে। শিশুরা সাধারণত হারতে চায় না। আপনি টানা দু-মিনিট ব্রাশ করে থেমে যান। এরপর তাকে জিতিয়ে দিন। মোটামুটি দু-মিনিট নিয়ম মেনে ব্রাশ করলে ঠিকভাবে ব্রাশ করা হয়ে যায়।
একটা সময় তাকে নিজে নিজে করতে দিন
শিশু বড় হতে হতে নিজের যত্ন নিজে নিতে শেখে, নিজের কাজ নিজে করতে শেখে। সে নিজে নিজে খেতে পারে, নিজে নিজে বিছানা গোঁছাতে পারে। তখন শিশুর দাঁতের যত্ন’ও তাকেই নিতে বলুন। নিজে নিজে ব্রাশ করতে বলুন। ব্রাশ করার সঠিক নিয়ম শিখিয়ে দিন। নিশ্চিত হোন, সে যেন সঠিক নিয়ম মেনে উপরের মাড়ির দাঁত, নিচের মাড়ির দাঁত, জিহ্বা ইত্যাদি সব পরিষ্কার করে। এভাবে একটা সময় সন্তান নিজেই দাঁতের যত্নের ব্যপারে নিজে থেকে সচেতন হবে। মাঝে মাঝে আপনাকে উপদেশও দিতে পারবে!
শিশুর দাঁত পোকায় খেয়েছে, ক্ষয় হয়ে গেছে; এমন দৃশ্য প্রায় অনেক শিশুর মাঝেই দেখা যায়। সেজন্য শিশুর দাঁতের যত্ন নিতে দাঁত ব্রাশের অভ্যাস গড়ে তোলাটা অনেক বেশি জরুরী।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,660 total views, 1 views today