শিশুদের হাতের লেখা সুন্দর করা নিয়ে চার পর্বের ধারাবাহিকে আজ দ্বিতীয় পর্বে থাকছে “লেখা হবে আনন্দে” বিষয় নিয়ে।
প্রথম পর্ব পড়তে – সুন্দর হোক শিশুর হাতের লেখা: শুরুতেই মৌলিক বিষয়
কোন কিছুর শেখার বা জানার মধ্যে যদি আনন্দ না থাকে, তাহলে সেটা অতিশয় বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর শিশুরা তো খুবই কোমলমতি । তারা আনন্দ নিয়ে কাজ করতে খুব বেশি পছন্দ করে। শিশুদের খুব সহজেই বুঝানো যায়। কিন্তু সেটার জন্যে আপনার কথা বলার ধরন এবং ব্যবহারিক টুলস হতে হবে মজার।
নতুন শব্দ লিখার আগে প্রয়োজন সেটাকে বিভিন্ন দিক থেকে দেখা। একটি নতুন অক্ষরকে শিশুর সামনে উপস্থাপন করতে হবে কৌতুহলের মধ্য দিয়ে। অক্ষরকে বিভিন্ন দিক থেকে দেখে সে তার মস্তিষ্কে সেটা ধারণ করবে। এতে করে শিশুর হাতের লেখা সুন্দর হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।
শুরু হোক খেলনা দিয়ে
অনেক মা-বাবাই সন্তানের জন্যে দামী খেলনা কিনেন। দামী খেলনা কিনতে গিয়ে হয়ত অনেক টাকা খরচ করছেন কিন্তু সেই খেলনা থেকে বাচ্চারা আসলে কী শিখছে? পাজল গেইম এমন একটি গেইম যা দ্বারা শিশুরা খুবই কৌতুহূলী হয়ে উঠে। বিভিন্ন অক্ষর একসাথে জড়ো করে রাখতে হবে। এরপর তার সামনে কোন একটি শব্দ লেখা আছে এমন কোন উপকরণ দিতে হবে। যেমন ধরুন, পানির জার। জারের সাথে Water লিখা আছে। এখন শিশুকে এই অক্ষরগুলো বের করতে বলুন। সে অনেকগুলো অক্ষর থেকে এই পাঁচটি অক্ষর বের করবে। শুরুতেই হয়ত পারবে না তাই তাকে সাহায্য করুন। এবার বের করা অক্ষর গুলোকে খাতায় লিখতে বলুন। প্রতিদিনই ধীরে ধীরে এটি চালিয়ে যেতে পারেন।
বাচ্চাদের মজার খেলনা সম্পর্কে জানুন- সন্তানের জন্য নির্বাচন করুন সঠিক খেলনা
লেখার জন্যে দিন নানা রঙের পেন্সিল
বিভিন্ন রঙের মধ্যে শিশুরা আনন্দ খুঁজে পায়। তারা আরো বেশি কৌতূহলী হয়ে ওঠে। এতে করে তাদের লেখার এবং শেখার আগ্রহ অনেক বেশি বৃদ্ধি পায়। তাই বিভিন্ন রঙের পেন্সিল তাদের দিতে হবে। বাজারে জেল বা গ্লিটারেরও অনেক পেন্সিল পাওয়া যায়। যেগুলো দিয়ে একই অক্ষরকে অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করা যায়। এতে শিশুদের হাতের লেখা সুন্দর হয়। অভিভাবকদের এসব ব্যাপারগুলো লক্ষ্য রাখতে হবে।
ছবি সম্বলিত বই দিন
বাজারে এমন কিছু বই পাওয়া যায় যার মধ্যে শব্দগুলো অনেক বড় বড় করে লেখা থাকে। এবং পাশে ঐ শব্দ দিয়ে মেলানো কোন ছবি দেয়া থাকে। বাচ্চারা অক্ষরগুলো দেখে সেটার উপর হাত ঘুরাতে পারে। এতে করে তাদের শব্দের আকার-আকৃতির ধারণা চলে আসবে। আমরা সবাই চাই বাচ্চারা ভাবনার গভীরে যাক। তাই তার কাছে দিতে হবে সঠিক উপকরণ। এতে সে ভাবতে শুরু করবে। সৃজনশীলতা নিয়ে নিজ থেকে চিন্তা করার শক্তি পাওয়া শিখবে।
লেখার জায়গা হোক উন্মুক্ত
হ্যাঁ, আপনি ঠিকই পড়ছেন। অনেক বাবা-মাই এটা নিয়ে অভিযোগ করেন বাচ্চারা দেয়ালে লিখে দেয়াল নষ্ট করে ফেলছে। কিন্তু এটা হয়ত সামন্যই বা অল্প কয়েকবারই শিশুরা করে। মনের মধ্যে ক্যানভাসে আকা ছবি গুলো খাতায়, ফ্লোরে, দেয়ালে ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করে। তার চিন্তা শক্তির দিক বিবেচনা করে তাকে সেটা করতে দিন। তবে যথাসাধ্য নিয়ন্ত্রনের মধ্যে রাখুন। শুরুতেই “না না” না করে তাকে বুঝিয়ে খাতায় বা ফ্লোরে লিখতে উৎসাহ দিতে পারেন। শিশুদের হাতের লেখা সুন্দর হওয়ার জন্যে এটা খুব বেশি জরুরী। আপনি যেটি করতে পারেন, বড় একটি ক্যানভাস নিয়ে আসতে পারেন বাসায়। এতে করে দেয়ালে লেখা বন্ধ হবে। কোমল মন অবশ্যই বুঝবে আপনার কথা।
শিশুর লেখায় আগ্রহ দেখানো খুবই জরুরী
বাচ্চা কখন কোথায় কী লিখছে সেটা নিয়ে আপনি আগ্রহ দেখান। তার লেখার প্রশংসা করুন। কোথাও কোন ভুল হলে তাকে সেটা খুঁজে দেখতে বলুন। না পারলে নিজ থেকে সাহায্য করুন। এতে করে তার লেখার স্পৃহা বাড়বে। সে লিখতে আনন্দ পাবে। একটা কথা সব সময় মনে রাখতে হবে যে শিশু যদি আনন্দ বা উৎসাহ না পায় তাহলে কাজগুলো কঠিন হয়ে যাবে।
আজ এই পর্যন্তই আগামী পর্বে আমরা লেখার পদ্ধতি নিয়ে জানবো। নতুন নতুন টুলস ব্যবহার করে শিশুর হাতের লেখা হয়ে উঠবে আরো সুন্দর।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
3,438 total views, 1 views today