শীতকালের আরেক নাম ভ্রমণকাল! কিন্তু প্ল্যান থাকলেও আপনি ভ্রমণে যেতে পারছেন না! কোলে নবজাতক! ঝুঁকি! এমন অনেক চিন্তা মাথায় ঘুরছে! ঘোরাটাই স্বাভাবিক। সে সব ভেবে আপনি ভ্রমণের প্ল্যান বাতিল করে দিতে পারেন। কিন্তু যদি বাতিল না করেন, তাহলে শিশুকে নিয়ে ভ্রমণ করার সময় আপনাকে মানতে হবে কিছু সাবধানতা, কিছু জরুরী বিষয়। এই সাবধানতা ও নিয়মগুলো আপনাকে ফ্যামিলি ট্যুর, দেশের বাড়ি যাওয়া থেকে শুরু করে নবজাতককে নিয়ে করা সব ধরণের ভ্রমনেই মানতে হবে।
ভ্রমণের স্থানের আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত হন
একদম সহজ কথায়, ভ্রমণের জন্য যেখানে যাবেন সেখানে গরম নাকি ঠান্ডা তা জেনে নিন এবং সে অনুযায়ী নবজাতকের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিন। কোন ঠান্ডা স্থানে ভ্রমণের জন্য পর্যাপ্ত গরম জামা, মোজা, টুপি ও গরম এলাকাতে ভ্রমণের জন্য আরামদায়ক হালকা জামা নিয়ে নিন। তবে শিশুকে নিয়ে ভ্রমণ করার সময় স্বাভাবিক আবহাওয়ার (খুব বেশি ঠান্ডা নেই এমন) স্থান পছন্দ করা উচিত।
ভ্রমণের স্থান নির্ধারণে খেয়াল রাখুন
সাধারণত ভ্রমণে গেলে স্থান নির্ধারণে পছন্দটাই আসল। কিন্তু যখন শিশুকে নিয়ে ভ্রমণ করবেন তখন স্থান নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুন। এক্ষেত্রে সাধারণত সমুদ্র সৈকত কিংবা কোন বহুল পরিচিত শহর পছন্দ করতে পারেন। পাহাড় ও যে কোন ধরণের দূর্গম এলাকায় নবজাতকসহ না যাওয়াই উত্তম। সমুদ্র সৈকতের ক্ষেত্রে, কুয়াকাটার মতো কম পরিচিত সৈকতও বাদ দেয়া উচিত। সহজ কথায় ভ্রমণের স্থান সকল ধরণের সুবিধাসম্পন্ন হওয়া উচিত।
পর্যাপ্ত পরিমাণ শিশুর খাবার নিয়ে নিন
এইটা বিশেষ করে যে সব শিশুকে ফর্মুলা খাওয়ানো হয় তাদের জন্য। ভ্রমণের সময় হিসেব করে সঠিক পরিমাণ ফর্মুলা নিয়ে নিন। আপনি যেই ব্র্যান্ডের ফর্মুলা সন্তানকে খাওয়ান সেই ব্রান্ডের ফর্মুলা সব জায়গায় নাও পেতে পারেন। আর ব্র্যান্ড পরিবর্তন না করাই উত্তম। অবশ্যই পথের সময়ের জন্য ফর্মুলা বাসা থেকে বানিয়ে নিবেন। কারণ গাড়িতে বানানো সম্ভব নাও হতে পারে।
দুধ খাওয়ানোয় কোন ধরণের সংকোচ নয়
শিশুকে দুধ খাওয়ানো প্রয়োজন? একদম কোন সংকোচ নয়। সাথে সাথে খাওয়ান। সন্তানের ক্ষুধা লাগলে কোন কোন ক্ষেত্রে অনেক মা’ই সন্তানকে পাবলিক প্লেসে দুধ খাওয়াতে সংকোচবোধ করেন। এটা মোটেও ঠিক নয়। বরং এই সময়ে আপনি সন্তানকে সঠিক সময়ে দুধ না খাওয়ালে সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া এখানে লজ্জা বা সংকোচের কিছুই নেই।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ডায়াপার সাথে নিন
ভ্রমণের জন্য যে স্থাণে যাবেন সেখানে শিশুর ডায়াপার পাবেন কি না জেনে নিন। খেয়াল রাখবেন সন্তানকে নিয়মিত যে ডায়াপার পরান তাই যেন থাকে। ভ্রমণে ডায়াপারের ধরণ পরিবর্তন হলে তা ছোট বাচ্চার জন্য বিরক্তিকর। আর নিশ্চিত না হতে পারলে তার জন্য বাসা থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ডায়াপার নিয়ে নিন। সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ এন্টিসেপটিক টিস্যু নিতে ভুল করবেন না। ভ্রমণের সময় ওয়ানটাইম ডায়াপার ব্যবহার করা উচিত। ক্লথ ডায়াপার হয়তো ঠিকমতো ধুয়ে জীবাণুমুক্ত করা সম্ভব হবে না।
বেবি ক্যারিয়ার ও অন্যান্য
সুবিধার জন্য চাইলে শিশুর সুবিধামতো আরামদায়ক বেবি ক্যারিয়ার নিয়ে নিতে পারেন। এতে ভ্রমণ কিছুটা আরামদায়ক হবে। বেবি ক্যারিয়ার নিলে সহজেই শিশুকে বহন করতে পারবেন। তাছাড়া সন্তানের সুবিধার জন্য যদি আর কিছুর প্রয়োজন মনে করেন তাও নিতে পারেন। সন্তানের সব কিছু নিয়েছেন কি না, বের হওয়ার আগে ব্যাগ একবার চেক করে নিতে পারেন।
যে কোন কিছুর জন্য প্রস্তুত থাকুন
ভ্রমণ নিয়ে অনেক প্ল্যান করলেন, বিচে গোসল করবেন, রাতের সমুদ্র দেখবেন কিন্তু সন্তান আপনার কোল থেকে নামতে চাইছে না, রাতে তাকে নিয়ে বাইরে থাকা যাবে না, রুমে একা রাখা যাবে না; এমন অনেক সমস্যার জন্য হুটহাট অনেক কিছু পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে। কিংবা মাঝপথ থেকে ফিরে আসাও লাগতে পারে। সেজন্য শিশুকে নিয়ে ভ্রমণের সময় যে কোন পরিস্থিতির জন্য আগে থেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
2,345 total views, 1 views today