পেয়ারা একটি অন্যতম পুষ্টিকর ফল হিসেবে বিবেচিত। অনেক বছর আগে পর্তুগীজরা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে সাথে করে এই ফলটি আমাদের দেশে নিয়ে এসেছিল। মূলত এখন এটি দেশীয় ফল হিসেবেই বিবেচিত। পেয়ারা মূলত বর্ষা মৌসুমের ফল। তথাপিও এখন বাজারে সারাবছরই পেয়ারা পাওয়া যায়। আর সহজলভ্য এই ফলটি দামেও অনেক সস্তা।
পেয়ারার পুষ্টিগুণ
পেয়ারায় আছে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, ‘এ’ এবং ‘বি’ কমপ্লেক্স আছে। আরও আছে যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, বিটা ক্যারোটিন, ফসফরাস এবং ফলিক এসিড। এগুলো আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী।
আসুন জেনে নেয়া যাক রোগ প্রতিরোধে পেয়ারার কার্যকর ভূমিকার কথাঃ
১। চোখের জ্যোতি বাড়ায়
পেয়ারায় বিভিন্ন রকমের ভিটামিন রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল ভিটামিন ‘এ’। এর ফলে এটি আমাদের দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে। এবং চোখে ছানি পড়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে থাকে।
২। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে
পেয়ারা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে। পেয়ারা শরীরে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ব্যালান্স বৃদ্ধি করে। যার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও ত্বকের যত্ন, স্ট্রেস সামাল দেওয়া, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ানোসহ নানা উপকার করে থাকে।
৩। ভিটামিন সি-এর ঘাটতি পূরণ করে
পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’ আছে। যা পাওয়ারহাউস নামে খ্যাত কমলার থেকেও চারগুণ বেশী। ভিটামিন ‘সি’ শ্বাসতন্ত্র ও ফুসফুসকে ব্যাকটেরিয়ার হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও সর্দিকাশি, মুখের ঘা, স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধেও ভিটামিন ‘সি’ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
৪। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমায়
শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতেও পেয়ারা কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। পেয়ারায় আছে খনিজ, ক্যালরি ও সহজে হজমযোগ্য শর্করা উপাদান। যা দেহের অতিরিক্ত ওজন কমাতে উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে।
৫। পেটের সমস্যা প্রতিরোধ করে
পেটের পীড়া দূর করতে এবং পাকস্থলী সুস্থ রাখতে পেয়ারার জুড়ি নেই। আমাশয় ও ডায়রিয়া নিরাময়ে এই ফলটি উপকারী ভূমিকা পালন করে থাকে। পেয়ারার আছে ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসীম ক্ষমতা।
৬। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে পেয়ারা কার্যকর ভূমিকা পালন করে। পেয়ারা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে ফলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুকিও কমে যায়। এছাড়াও ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্যও পেয়ারা দারুণ উপকারী। এর উচ্চমাত্রার ভক্ষণযোগ্য ফাইবার দেহে চিনি শোষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
৭। গর্ভবতী মা ও শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করে
গর্ভবতী নারীদের শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকার জন্য পেয়ারা খাওয়া উচিত। এতে বিদ্যমান ফলিক এসিড অনাগত শিশুর নার্ভাস সিস্টেমকে উন্নত করে। এবং শিশুদের নিউরোলোজিক ডিজঅর্ডার হওয়ার ঝুঁকি প্রশমিত করে।
৮। ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে
পেয়ারা ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে। এই ফলে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও পলিফেনল ক্যান্সার প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে থাকে। বিশেষ করে কোলন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
(দেখুন পেয়ারার জেলি বানানোর রেসিপি- https://www.youtube.com/watch?v=vnL-iwQKQSc)
ফরমালিনমুক্ত এই ফলটি নিশ্চিন্ত মনেই বাচ্চাকে খেতে দিতে পারেন। পেয়ারা খেলে ক্ষুধামন্দা দূর হয় এবং সহজেই পেট ভরে যায়। আর কাঁচা বা পাকা পেয়ারার এক গ্লাস ঠাণ্ডা জুস গরমের দিনে প্রশান্তির পরশ এনে দিবে। এছাড়াও পেয়ারা দিয়ে সুস্বাদু এবং স্বাস্থ্যকর পেয়ারার জেলি বানাতে পারেন। যা নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি, উদ্যোক্তা হিসেবেও বাজারজাতকরণ করতে পারেন।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,733 total views, 1 views today