এটা খুবই স্বাভাবিক যে বাচ্চারা অনেকসময় খাওয়ায় অনীহা প্রকাশ করে এবং খাবার ফিরিয়ে দেয়। এটা বয়সভেদে বিভিন্ন অবস্থায় হতে পারে যেমন কিছু বাচ্চা একদম ছোট থাকতে হয়তো খাওয়াদাওয়ায় খুব আগ্রহী ছিল যেটা পরবর্তীতে কমে আসে, আবার কারো কারো ক্ষেত্রে উল্টোটাও হয়। কিন্তু সমস্যা তখনি হয় যখন এই অনাগ্রহটা এক দীর্ঘমেয়াদে পড়ে, যেই রোগটিকে আমরা অরুচি বলে থাকি। তখন জোর করতে গেলে বরং পরিণাম হয় ভয়বহ তাই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হয়। কিন্তু নীরোগ বাচ্চাদের ক্ষেত্রে কিছু টিপস ফলো করলে খুব সহজেই তাদের খাওয়ার অনাগ্রহ কাটিয়ে খাবারের প্রতি উৎসাহী করে তোলা যায়…
১। কোন খাবারের ক্ষেত্রে জোরাজুরি না করা
“এই খাবারটা ভালো এটা খাও, ওইটা খেও না” এইধরনের জোরাজুরি করবেন না। বরং বাচ্চাকে বোঝাতে শেখান কিছু খাবার সবসময়ের আর কিছু মাঝেমাঝে খাওয়ার। নইলে সে নিষিদ্ধ খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে রেগুলার ডায়েট চার্টে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।
২। খাওয়ার সময় খাওয়া
বাচ্চাদের খুব সহজেই মনোযোগ সরে যায়। খাওয়ার সময় টিভি দেখা বা অন্য কোন কাজে অভ্যস্ত করে ফেলবেন না। এতে ধীরে ধীরে খাবারের প্রতি মনোযোগ হারিয়ে ফেলবে এবং এটাকে কষ্টকর কাজ মনে করবে।
৩। খাবারে বৈচিত্র্য আনা
আপনার রান্না যতই স্বাদের হোক, একই জিনিস প্রতিবেলা দিতে থাকলে একঘেয়েমি লাগবেই। তাই কোন নির্দিষ্ট রেসিপিতে আটকে না থেকে নিউট্রিশান লেভেল ঠিক রেখে আইটেমে ভিন্নতা নিয়ে আসুন।
৪। যেটা চায়, সেটাই দেয়া
অনেকসময় বাচ্চারাই নির্দিষ্ট খাবারে আটকে যায়। এটা বেশিদিন থাকেনা, কিন্তু খাবারের পুষ্টিগুণ ঠিক থাকলে সম্ভব হলে সেটাই দিন।
৫। পছন্দ করতে দেয়া
যদি একের অধিক মেন্যু থাকে, তাহলে তার পছন্দমত বেছে নিতে দিন। নিজ থেকে অপশান চাপিয়ে দিবেননা। কিন্তু যদি একটা খাবার ট্রাই করে ভালো না লাগে, তাহলে সেই বেলার জন্য আপাতত জোর করবেন না।
৬। অল্প করে বার বার দেয়া
-বাচ্চারা প্রথমেই প্লেটভর্তি খাবার দেখলে অনেকসময় হতাশ হয়ে পড়ে। তাই শুরুতে অল্প করে দিন, যেটুকু শেষ করতে পারবে ভেবে শুরু করবে। এরপর জিজ্ঞেস করুন আর লাগবে কিনা, যদি পছন্দ হয় আর ক্ষুধা থাকে তো অবশ্যই চাইবে। তারা কতটুকু খেতে পারে ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন এবং এর অধিক দেয়ার চেষ্টা করবেন না।
৭। প্রতিবেলার সময় নির্দিষ্ট করে রাখা
রেগুলার নাস্তা এবং খাবারের সময় বেঁধে নিন। এমনভাবে ঠিক করবেন যেন অই সময়টায় বাচ্চা ক্ষুধা বোধ করে কিন্তু ক্লান্ত না হয়। নির্দিষ্ট সময় চাইবার অভ্যেস করুন, তাহলে আর ফিরিয়ে দেবেনা।
৮। খাবার ফিরিয়ে দিলে শান্ত থাকা
প্লেটের খাবার শেষ করা অভ্যেস করান, যেটুকু খেতে পারবে সেটুকুই যাতে নেয়। কিন্তু এরপরেও রয়ে গেলে অন্য ব্যবস্থা নিন। স্বাভাবিক অবস্থায় যথেষ্ট হলেই ফিরিয়ে দেয়, তাই তখন যত কম জোর করবেন ততই ভালো।
৯। মাঝেমাঝে তাকেই খাবার বানাতে দেয়া
খাওয়াদাওয়া বিষয়টায় আনন্দ নিয়ে আসুন। অনেকসময় বাচ্চারা নিজে কোনকিছু বানাতে চায়, তাতে রান্নাঘর এলোমেলো হয়, এটা খুব স্বাভাবিক। সবাই মিলে একসাথে খেতে বসার চেষ্টা করুন।
১০। শিশুর খাবার তার নিজেকেই নিতে দেয়া
বাচ্চা যতটুকু খেতে পারবে আন্দাজ করে নিজের খাবার নিজে নেয়ার অভ্যেস করান। এতে সে ব্যাপারটাকে বোঝা মনে করবে না। টেবিল সাজানো থেকে শুরু করে প্লেট ধোয়া পর্যন্ত সবকিছুতে ওর অংশ নিতে দিন। সামগ্রিক ব্যাপারটায় আনন্দের সাথে আগ্রহী করে তুলুন।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
1,582 total views, 1 views today