প্রায় প্রতিদিনই পত্রিকা ও টিভিতে আমরা অপহরণের খবর দেখি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপহরণের শিকার হয় শিশুরা। কখনো কি ভেবে দেখেছেন, আপনার সন্তানও অপহরণের শিকার হতে পারে! আপনার সচেতনতা ও সহজ কিছু কৌশল আপনার সন্তানকে অপহরণের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। আপনার সন্তানকে অপহরণের হাত থেকে রক্ষা করতে কি কি করতে হবে এমন কিছু কৌশল নিয়ে আমাদের আজকের লেখা।
ব্যাক্তিগত তথ্য যথাসম্ভব গোপন রাখা
আমরা অনেক সময় শিশুদের স্কুলব্যাগ ও অন্যান্য জিনিসপত্রে শিশুর নাম লিখে রাখি। এতে অপরিচিত কেউ শিশুর নাম ও কিছু ব্যাক্তিগত তথ্য জেনে যায়। অপহরণকারীরা এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে। তারা শিশুর সাথে গল্পের ছলে শিশুর ব্যাক্তিগত তথ্য শেয়ার করে সহজে তার বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করে নেয়। ফলে শিশুর কাছে সে আর অপরিচিত থাকে না। এবং এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েই অপহরণকারীরা আপনার সন্তানকে অপহরণ করতে পারে।
আরো জানতে পড়ুন, (সন্তানের অনাকাঙ্খিত আচরন দূর করার প্যারেন্টিং টিপস)
অপরিচিত কারো অস্বাভাবিক আচরণ সম্পর্কে সচেতন থাকা
আপনার শিশুকে অপরিচিত কারো অস্বাভাবিক আচরণ সম্পর্কে অবগত করুন। সে যেনো কারো অস্বাভাবিক আচরণ অথবা ধমকে ভয় না পেয়ে আশেপাশে কাউকে জানায় অথবা চিৎকার করে। এতে আপনার সন্তান কখনো অপহরণকারীদের হাতে পড়লেও আশেপাশের মানুষ থেকে সাহায্য পেতে পারে।
শিশুদের কোথাও একা যেতে দেওয়া যাবে না
শিশুদেরকে কোথাও একা ছাড়া যাবে না। বাইরে যাওয়ার সময় শিশুর সাথে পরিবারের কারো উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে পরিবারের কারো অবর্তমানে নির্দিষ্ট দুএকজন বিশ্বাসযোগ্য পরিচিত ব্যাক্তির ব্যাপারে শিশুকে ধারণা দিয়ে রাখতে হবে।
বাসার নতুন কর্মচারী সম্পর্কে আগে থেকে খোঁজ খবর নিন
বাসার দারোয়ান, কেয়ারটেকার, ড্রাইভার ও নতুন যেকোন লোক নিয়োগের আগে তার সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে নিন। অনেকক্ষেত্রে অপহরণে বাসার কাজের লোকদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এই বিষয়ে আগে থেকে সচেতণ হলে যেকোন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো যাবে। অফিসের নতুন লোকদের ব্যাপারেও এমন সতর্কতা অবলম্বন করতে পারেন।
সন্তানের স্কুলে যাওয়া আসার সময়ের ব্যাপারে যত্নশীল ও একটা নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলুন
সন্তানের স্কুলে যাওয়া আসার সময়ের ব্যাপারে সচেতন হোন। চেষ্টা করুন প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তাকে স্কুলে দিয়ে আসতে ও নিয়ে আসতে। যদি কোন কারণে কখনো সময় নিয়ন্ত্রণ করতে না পারেন সেক্ষেত্রে আপনার সন্তানকে আগে থেকে জানিয়ে রাখুন সে যেনো পরিচিত কাউকে না পাওয়া পর্যন্ত স্কুলের আঙ্গিনা ত্যাগ না করে। যেসব শিশুদের স্কুলের গাড়ি আছে তারা যেনো স্কুলের গাড়ি ছাড়া অন্য কোন গাড়িতে না চড়ে।
বাসায় একা থাকা অবস্থায় অপরিচিত কারোর জন্য দরজা না খোলা
বর্তমানে অনেক বাবা-মা আছেন যারা দুজনই চাকরি করেন। এক্ষেত্রে আপনার সন্তানটি একটা সময় বাসায় একা থাকে। অপহরণকারীরা এই সুযোগটা নিতে পারে।বাসায় একা থাকা অবস্থায় অপরিচিত কেউ আসলে আপনার সন্তানকে দরজা না খোলার পরামর্শ দিন। যদি কোন হোম সার্ভিসের লোকও আসে সেক্ষেত্রেও খোলা যাবে না। কেউ যদি দরজা খোলার জন্য জোরাজুরি করে সেক্ষেত্রে দ্রুত বাবা-মাকে জানাতে অথবা কোন বিশ্বস্ত প্রতিবেশিকে জানানোর জন্য বলুন।
আরো জানতে ক্লিক করুন
ইন্টারনেটে কারো সাথে তথ্য আদানপ্রদান থেকে বিরত থাকা
প্রযুক্তির দুনিয়াতে ইন্টারনেট একটা বড় জায়গা দখল করে আছে। পড়ালেখা বা অন্যকোন প্রয়োজনে আপনার সন্তান ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকলে যেমন অনেক কিছু জানতে পারবে। আপনার সন্তানকে ইন্টারনেটে তথ্য আদানপ্রদান সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা দিন। কাদের সাথে ব্যাক্তিগত তথ্য, দৈনন্দিন রুটিন শেয়ার করা যাবে কাদের সাথে করা যাবেনা সেটা জানান। তবে ইন্টারনেটে অতি উৎসাহি কাউকে অপ্রয়োজনে এইসব তথ্য না দেওয়াই উত্তম, যদি সে পরিচিতও হয়। অপহরণকারীরা এইসব তথ্য নিয়ে সহজেই তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে ফেলতে পারে।
পড়তে পারেন ( সন্তানের মোবাইল গেম আসক্তি দূর করবেন যেভাবে )
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
2,128 total views, 1 views today