অটিজম কোন রোগ নয়। এটি শিশুর একটি আচরণগত সমস্যা। অটিজমের কারণে শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ ও আচরণগত উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। তার মধ্যে ভাষাগত উন্নয়ন অন্যতম। সঠিকভাবে অটিস্টিক শিশুর পরিচর্যা করলে অনেক ক্ষেত্রেই তাকে কিছুটা স্বাভাবিক করা যায়। অটিস্টিক শিশুরা কথা বলে অনেক দেরিতে। সন্তানের মুখ থেকে প্রথম শব্দটি শুনতে একজন অটিস্টিক শিশুর বাবা-মাকে অপেক্ষা করতে হয় অন্তত ৪ বছর বা তার বেশি। বেশিরভাগ অটিস্টিক শিশুর ভাষাই আটকে যায় অল্প কয়েকটা শব্দে। ভাষাগত উন্নয়ন যেমন দেরিতে হয় তেমনি ভাষাজ্ঞান সমৃদ্ধও হয় দেরিতে। কিন্তু সঠিকভাবে অটিস্টিক শিশুর পরিচর্যা ও তার সাথে আপনার আচরণ প্রতিদিন অল্প অল্প করে তার ভাষাজ্ঞানকে উন্নত করবে। আজকে আমরা অটিস্টিক শিশুর ভাষাজ্ঞান উন্নয়নে আমাদের করণীয় সম্পর্কে।
অটিস্টিক শিশুর পরিচর্যা; ভাষাগত উন্নয়ন
আশপাশের সাথে তার সম্পৃক্ততা বাড়ান
শিশুরা তার চারপাশের পরিবেশ থেকে শেখে। এটা যেমন স্বাভাবিক শিশুদের ক্ষেত্রে সত্য তেমনি সত্য একজন অটিস্টিক শিশুর ক্ষেত্রেও। স্বাভাবিক শিশুদের তথ্য গ্রহন করার ক্ষমতা কিছুটা বেশি, অটিস্টিক শিশুদের হয়তো একটু কম। কিন্তু তাই বলে তাকে আশেপাশের পরিবেশের সাথে যুক্ত করা যাবে না এমন কোন কথা নেই। জড়তা, লজ্জা সবকিছুকে ছুড়ে ফেলে আপনার অটিস্টিক সন্তানকে বেশি বেশি করে চারপাশের সাথে মিশতে দেন। তাকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে যান, তার সামনেই হকারের সাথে কথা বলে বাদাম কিনে খান। পারিবারিক অনুষ্ঠানে তার সাথে অন্যদের সম্পৃক্ততা বা ইন্টারেকশন বাড়ান। সে যত বেশি মানুষকে কথা বলতে দেখবে, মানুষের কথা শুনবে তত বেশি তার ভাষাজ্ঞান সমৃদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
তার আগ্রহ নিয়ে বলতে দিন
সব শিশুরই কিছু জিনিসের প্রতি আগ্রহ থাকে। তেমন কিছু জিনিসের প্রতি আগ্রহ থাকে আপনার অটিস্টিক সন্তানেরও। তার আগ্রহের জায়গাটা খুঁজে বের করে তার সাথে তাকে সম্পৃক্ত করুন বেশি করে ও আগ্রহের বিষয় সম্পর্কে তার সাথে কথা বলার ও তার কথা শোনার চেষ্টা করুন। ধরুন তার একটা প্রিয় খেলনা আছে, যা নিয়ে সে খেলতে বেশি পছন্দ করে। তাকে সেই খেলনা নিয়ে খেলতে দিন। একসময় খেলা শেষ হলে সে খেলনা তার নাগালের বাইরে লুকিয়ে রাখুন। এরপর সে খেলনাটি চাইলে তাকে দিন। প্রথম প্রথম সে ইশারায় বোঝাতে চাইবে। কিন্তু কয়েকদিন পর আপনি তার ইশারা না বোঝার ভান করুন ও তাকে মুখে বলতে উৎসাহ দিন। সে যা চায় তা মুখে না বলা পর্যন্ত দিবেন না।
সহজ ও ছোট বাক্য ব্যবহার করুন
সাধারণত অটিস্টিক শিশুর জটিল যেকোন কিছুতে বিরক্ত হয়। তার সাথে কথা বলার সময় জটিল বাক্য ও অপ্রচলিত শব্দ ব্যবহারে সে কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে ও মনযোগ সরিয়ে নেয়। তার সাথে কথা বলার সময় সহজ, ছোট ছোট বাক্য ও শব্দ ব্যবহার করুন। সহজ ও ছোট বাক্য ব্যবহার করলে সে সহজেই বাক্য বা শব্দটি বুঝতে ও শিখতে পারবে।
তাকে কাজ ও অনুভূতি সম্পর্কে জানান
প্রতিটা কাজেরই নাম থাকে, প্রতিটা অনুভূতিরও নাম থাকে। তার প্রতিদিনের কাজ পর্যবেক্ষণ করে তাকে আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু ও আমাদের ছোট ছোট অনুভূতিগুলোর নাম জানান। যেমন ধরুন-সে কিছু খাওয়ার জন্য নিজে নিজে ফ্রিজ খুললো ও তার পছন্দ খাবার নিলো। তখন তাকে ফ্রিজের নাম শেখান ও জানান যে, তার ক্ষুধা বা তৃষ্ণা লাগার কারণে সে ফ্রিজের কাছে গিয়েছে ও সেখান থেকে খাবার বা পানি নিয়েছে। পানি খেলে তার তৃষ্ণা নিবারণ হবে ও খাবার খেলে ক্ষুধা।
প্রযুক্তিও ব্যবহার করতে পারেন
মোবাইল, ইউটিউব ও গেমসের প্রতি বাচ্চাদের আকর্ষণ থাকে সবসময়। আপনার অটিস্টিক সন্তানের ভাষাজ্ঞান উন্নয়নে ও যথাযথ বিকাশে সাহায্য নিতে পারেন প্রযুক্তিরও। ফলে আপনার চেষ্টায় আরেকটু ভালো মানের মাত্রা যোগ হবে। ইন্টারনেটে কিংবা স্মার্টফোনের প্লে স্টোরে অটিস্টিক বাচ্চাদের বিকাশের জন্য অনেক দারুন দারুন অ্যাপ ও গেমস পাওয়া যায়। আপনি সেগুলো দিয়েও আপনার সন্তানের সঠিক বিকাশে তাকে সাহায্য করতে পারেন।
তার চোখে চোখ রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন
চোখে রেখে কথা বললে ও শুনলে বা মুখমন্ডলের দিকে তাকিয়ে কারো কথা শোনার ফলে তার কথা বলার অঙ্গভঙ্গি খেয়াল করা যায়। যা অটিস্টিক শিশুদের ভাষাগত উন্নয়ণে সাহায্য করে। কিন্তু অটিস্টিক শিশুদের অন্যতম সমস্যা হলো কারো চোখে চোখ না রাখা বা মুখমন্ডলের দিকে না তাকানো। তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কারোর কথা শোনার সময় ও কারো সাথে কথা বলার সময় অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে বা নিচের দিকে তাকিয়ে থাকে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনি কপালে মজার কোন স্টিকার লাগিয়ে তার সাথে কথা বলতে পারেন। এতে সে স্টিকারের দিকে তাকানোর ফলে কথা বলার সময় আপনার মুখের ভঙ্গি খেয়াল করতে পারবে ও তার মাঝে চোখে চোখ রাখার অভ্যাসও গড়ে উঠবে।
একজন অটিস্টিক শিশুর পরিচর্যা নিতে সবার আগে দরকার তার পাশে থাকার প্রতিজ্ঞা। শত প্রতিকূলতার মাঝেও তাকে বোঝা না ভাবা, তাকে আমাদের চেয়ে আলাদা না ভাবা। আমাদের এই পাশে থাকার মানসিকতাই একজন অটিস্টিক শিশুকে ভালোভাবে বড় হতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র সায়েন্স কিট অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স আপনার সন্তানের অবসর সময় সুন্দর করবে, এবং তার মেধা বিকাশে সাহায্য করবে। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
#mc_embed_signup{background:#fff; clear:left; font:14px Helvetica,Arial,sans-serif; }
/* Add your own Mailchimp form style overrides in your site stylesheet or in this style block.
We recommend moving this block and the preceding CSS link to the HEAD of your HTML file. */
নিয়মিত এমন কন্টেন্ট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন
4-7
8-10
11-12
13-15
15+
(function($) {window.fnames = new Array(); window.ftypes = new Array();fnames[2]=’MMERGE2′;ftypes[2]=’dropdown’;fnames[1]=’FNAME’;ftypes[1]=’text’;fnames[0]=’EMAIL’;ftypes[0]=’email’;fnames[4]=’PHONE’;ftypes[4]=’phone’;fnames[5]=’MMERGE5′;ftypes[5]=’text’;}(jQuery));var $mcj = jQuery.noConflict(true);
1,685 total views, 1 views today